পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হিসাব @> কিন্তু, এমন টাকা আছে যা গায়ে চলে কিন্তু শহরে চলে না, শহরের বাজে দোকানে চলে যায় কিন্তু ব্যাঙ্কে চলে না। ব্যাঙ্কে তাকে ভাঙাতে গেলেই সেখানে যে পোদারটি আছে সে একেবারে স্পর্শমাত্রেই তাকে তৎক্ষণাৎ মেকি বলে বাতিল করে দেয়। আমাদেরও সেই দশা— আমরা ঘরের মধ্যে, গায়ের মধ্যে, সমাজের মধ্যে নিজেকে চলনসই করে রেখেছি, কিন্তু বড়ো ব্যাঙ্কে যখন দাড়াই তখনই পোদারের কাছে এক মুহূর্তে আমাদের সমস্ত খাদ ধরা পড়ে যায় । সেখানে যদি চলতি হতে চাই তবে সত্য হতে হবে, আরো সত্য হতে হবে। আরো অনেক বাধনে নিজেকে বাধতে হবে, আরো অনেক দায় মানতে হবে। সেই অমৃতের বাজারে এতটুকু মেকিও চলে না— একেবারে খাটি সত্য না হলে অমৃত কেনবার আশা করাও যায় না । তাই বলছিলুম, কেবল অমৃতরসের কথা তো বললেই হবে না, তার হিসাবটাও দেখতে হবে । আমরা নিজের হিসাব যখন মেলাতে বসি তখন দু-চার টাকার গরমিল হলেও, বলি, ওতে কিছু আসে যায় না। এমনি করে রোজই গরমিলের অংশ কেবলই জমে উঠছে। প্রকৃতির সঙ্গে এবং মানুষের সঙ্গে ব্যবহারে প্রত্যহই ছোটোবড়ো কত অসত্য কত অন্যায়ই চালিয়ে দিচ্ছি সে সম্বন্ধে যদি কথা ওঠে তো বলে বসি, ‘অমন তো আক্সার হয়েই থাকে, অমন তো কত লোকেই করে, ওতে ক’রে এমন ঘটে না যে আমি ভদ্রসমাজের বার হয়ে যাই ।” ঘোরো হিসাবের খাতায় এইরকম শৈথিল্য ঘটে কিন্তু যার জাতিতে সাধু, যারা মহাজন, তারা লাখ টাকার কারবারে এক পয়সার হিসাবটি না মিললে সমস্ত রাত্রি ঘুমোতে পারে না। যারা