পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૭૨ শান্তিনিকেতন বিশ্বের একটা মহল তো নয়। তার নানা মহলে নানারকম উৎসবের ব্যবস্থা হয়ে আছে। সজনে নির্জনে নানা ক্ষেত্রে উৎসবের নানা ভিন্ন ভাব, আনন্দের নানা ভিন্ন মূর্তি। নীলাকাশতলে প্রসারিত প্রাস্তরের মাঝখানে এই ছায়াস্নিগ্ধ নিভৃত আশ্রমের যে প্রাত্যহিক উৎসব, আমরা আশ্রমের আশ্রিতগণ কি সেই উৎসবে সুর্যতারা ও তরুশ্রেণীর সঙ্গে কোনোদিন যোগ দিয়েছি ? আমরা এই আশ্রমটিকে কি তার সমস্ত সত্যে ও সৌন্দর্যে দেখেছি ? দেখি নি। এই আশ্রমের মাঝখানে থেকেও আমরা প্রতিদিন প্রাতে সংসারের মধ্যেই জেগেছি এবং প্রতিদিন রাত্রে সংসারের কোলেই শুয়েছি। ৩৬৪ দিন পরে আজ আমরা আশ্রমবাসিগণ এই আশ্রমকে দেখতে এসেছি। যখন স্বর্য পূর্বগগনকে আলো করে ছিল তখন দেখতে পাই নি, যখন আকাশ ভরে তারার দ্বীপমালা জলেছিল তখনও দেখতে পাই নি— আজ আমাদের এই ক’টা তেলের আলো, বাতির আলো জালিয়ে একে দেখব ! তা হোক, তাতে অপরাধ নেই। মহেশ্বরের মহোৎসবের সঙ্গে যোগ দিতে গেলে আমাদেরও যেটুকু আলোর সম্বল আছে তাও বের করতে হয়। শুধু তার আলোতেই তাকে দেখব এ যদি হত ত৷ হলে সহজেই চুকে যেত। কিন্তু, এইটুকু কড়ার তিনি আমাদের দিয়ে করিয়ে নিয়েছেন যে, আমাদের আলোটুকুও জালতে হবে, নইলে দর্শন হবে না, মিলন ঘটবে না— আমাদের যে অহংকারটি দিয়ে রেখেছেন সে এরই জন্তে । অহংকারে আগুন জেলে আমরা মহোৎসবের মশাল তৈরি করব। তাই চিরজাগ্রত আনন্দকে দেখবার জন্যে আমার নিজের এইটুকু আনন্দকেও জাগিয়ে তুলতে হয়, সেই চিরপ্রকাশিত জ্ঞানকেও জানবার জন্তে আমার জ্ঞানটুকুর ক্ষুদ্র পলতেটিকে উসকে দিতে হয়— আর র্যার প্রেম আপনি প্রবাহিত হয়ে ছাপিয়ে পড়ছে তার সেই অফুরান প্রেমকেও আমরা উপলব্ধি করতে পারি নে যদি ছোটে