পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দীক্ষা &6t আরাম নেই, তোমাকে রাত্রিদিন জাগ্রত থাকতে হবে । এই সত্যকে রক্ষা করতে তোমার যদি সমস্তই যায় তো সমস্তই যাক । কিন্তু সাবধান, তোমার হাতে আমার সত্যের অসন্মান না ঘটে।’ র্তার প্রভুর কাছ থেকে এই সত্যের দান নিয়ে তার পরে আর তে তিনি ঘুমোতে পারেন নি। তার আত্মীয় গেল, ঘর গেল, সমাজ গেল, নিন্দায় দেশ ছেয়ে গেল— এত বড়ো বৃহৎ সংসার, এত মানী বন্ধু, এত ধনী আত্মীয়, এত র্তার সহায়, সমস্তের সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটে গেল এমন দীক্ষা তিনি নিয়েছিলেন। জগতের সমস্ত আহুকুল্যকে বিমুখ করে দিয়ে এই সত্যটি নিয়ে তিনি দেশে দেশে অরণ্যে পর্বতে ভ্রমণ করে বেড়িয়েছেন। এ যে প্রভুর সত্য। এই অগ্নি-রক্ষার ভার নিয়ে আর আরাম নেই, আর নিদ্রা নেই। রুদ্রদেবের সেই অগ্নিদীক্ষা আজকের দিনের উৎসবের মাঝখানে আছে । কিন্তু, সে কি প্রচ্ছন্নই থাকবে ? এই গীতবাদ্যকোলাহলের মাঝখানে প্রবেশ করে সেই ভয়ানাং ভয়ং ভীষণং ভীষণানাং যিনি তার দীপ্ত সত্যের বজমুর্তি আজ প্রত্যক্ষ করে যাবে না ? গুরুর হাত হতে সেই ষে বজ্ৰমুগুতং তিনি গ্রহণ করেছিলেন এই ৭ই পৌষের মর্মস্থানে সেই বজ্ৰতেজ রয়েছে। ". . . কিন্তু, শুধু বজ্র নয়, শুধু পরীক্ষা নয়, সেই দীক্ষার মধ্যে যে বরাভয় আছে তাও দেখে যেতে হবে । সেই ধনিসস্তানের জীবনে যে সংকটের দিন এসেছিল তা তো সকলের জানা আছে। যে বিপুল ঐশ্বর্য রাজহর্ম্যের মতে একদিন তার আশ্রয় ছিল সেইটে যখন অকস্মাৎ র্তার মাথার উপরে ভেঙে পড়ে তাকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেবার উদযোগ করেছিল তখন সেই ভয়ংকর বিপৎপতনের মাঝখানে একমাত্র এই সত্যদীক্ষা তাকে আবৃত করে রক্ষা করেছিল— সেই দিনে তার আর-কোনো পার্থিব সহায় ছিল না। এই দীক্ষা শুধু যে দুর্দিনের দারুণ