পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Wor শান্তিনিকেতন কিন্তু, কয়জন মানুষে মিলে যখন কলরব করে তখন প্রভাতপ্রকৃতির এই স্তব্ধতা কেন এমন ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। উপাসনার জন্যে সাধক পশুপক্ষীহীন স্থান তো খোজে না, মানুষহীন স্থান খুজে বেড়ায় কেন ? তার কারণ এই যে, বিশ্বপ্রকৃতির সঙ্গে মানুষের সম্পূর্ণ ঐক্য নেই। বিশ্বপ্রবাহের সঙ্গে মানুষ এক টানে, এক তালে চলে না। এইজন্যেই যেখানেই মানুষ থাকে সেইখানেই চারি দিকে সে নিজের একটা তরঙ্গ তোলে ; সে একটিমাত্র কথা, না বললেও তারার মতো নিঃশব্দ, ও একটুমাত্র নড়াচড়া না করলেও বনস্পতির মতো নিস্তব্ধ থাকে না। তার অস্তিত্বই অগ্রসর হয়ে আঘাত করে। ভগবান ইচ্ছা করেই বিশ্বপ্রকৃতির সঙ্গে মানুষের সামঞ্জস্য একটুখানি নষ্ট করে দিয়েছেন– এই তার আনন্দের কৌতুক । ওই-ষে আমাদের পঞ্চভূতের মধ্যে একটু বুদ্ধির সঞ্চার করেছেন, একটা অহংকার যোজন করে বসে আছেন, তাতে করেই আমরা বিশ্ব থেকে আলাদা হয়ে গেছি— ঐ জিনিসটার দ্বারাতেই আমাদের পংক্তি নষ্ট হয়ে গেছে । এইজন্যেই গ্রহস্থৰ্যতারার সঙ্গে আমরা আর মিল রক্ষা করে চলতে পারি নে— আমরা যেখানে আছি সেখানে যে আমরা অাছি এ কথাটা আর কারও ভোলবার জো থাকে না । ভগবান আমাদের সেই সামঞ্জস্যটি নষ্ট করে প্রকৃতির কাছ থেকে আমাদের একঘরে করে দেওয়াতে, সকালবেলা থেকে রাত্রি পর্যন্ত আমাদের নিজের কাজের ধন্দায় নিজে ঘুরে বেড়াতে হয়। ওই সামঞ্জস্যটি ভেঙে গেছে বলেই আমাদের প্রকৃতির মধ্যে বিরাট বিশ্বের শাস্তি নেই— আমাদের ভিতরকার নানা মহল থেকে রব উঠেছে, "চাই চাই চাই ।” শরীর বলছে চাই, মন বলছে চাই, হৃদয় বলছে চাই— এক মুহূর্তেও এই রবের বিশ্রাম নেই। যদি সমস্তর সঙ্গে