পাতা:শান্তিলতা - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেখো। এখানে ওখানে মেরামতি করে কী হবে ? মূল ধরে টান দিতে হবে। রোগের জড়টাকে মারতে হবে। কনকনে শীতে খেয়াঘাটে গিয়ে দাড়ায় সুখেন্দু। একা । উত্তরে হাওয়া বইছে। টের পাচ্ছে হাড়ে মজ্জায়। শীতের তীক্ষতা ছাড়া আর সমস্ত আবেগ অনুভূতি চিন্তাভাবনা যেন অসাড় করে দিতে চায়। ওপারে শ্মশানঘাটের জ্বলন্ত চিতাটা নিবু-নিবু হয়ে এসেছে। ছোট ছোট কয়েকটা শিখা তখনও মাথা তুলছে। সবকিছু কেমন যেন অজানা অচেনা মনে হয় সুখে দুর। আগুন কেমন তাও যেন ভুলে গেছে। চেষ্টা করলেও মনে পড়ে না। এই কনকনে ঠাণ্ডার বদলে যদি আমাকাঠের প্রকাণ্ড চিতার লেলিহান শিখা তার জীবন্ত দেহটা ঘিরে থাকত। কিংবা এখন যদি থাকত নিজের ঘরের নিরেট আশ্রয়ো! মায়ী বাদলার মাঝরাতের ঠাণ্ডা হাওয়ার শুধু ফাঁক-ফোকর দিয়ে ঢোকার অধিকার। নীচে তোশক, ওপরে লেপ। গা-পুড়ে-যাওয়া জ্বরের তাপের উপে যাওয়ার পথ নেই। কেমন লাগত। তা হলে ? আজ মাঝরাতে নদীর ধারে খেয়ার অপেক্ষায় দাড়িয়ে বুঝতে পারা যায় না কেমন লাগত। ম্যালেরিয়া জ্বর এলে নিরাপদ আশ্রয়ে লেপ তোশক চাপা দিয়ে ঠক ঠক করে কঁপা । কিন্তু না-এলোমেলো চিন্তা সইবে না । ঠাঁকে ডাকে শাস্তুকে জাগিয়ে খেয়া নৌকো আনাতে হবে ওপার থেকে এপারে। নদী পার হতে হবে তার খেয়ায়। ঘরে পৌছতে হবে। আশ্রয় নিতে হবে লেপ-তোশকের বিছানায়। &