পাতা:শিক্ষার বিকিরণ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শিক্ষার বিকিরণ
১৫

পারে। কবিতা গল্প নাটকের বাজারের দিকে যারা সমজদারের রাজপথটা পায়নি অন্তত তারা আনাড়িপাড়ার মাঠ দিয়েও চলতে পারে, কোনো মাশুল দিতে হয় না কোথাও। কিন্তু যে-বিদ্যা মননের, সেখানে কড়া পাহারার সিংহদ্বার পেরিয়ে যেতে হয়, মাঠ পেরিয়ে নয়। যে-সব দেশের পরে লক্ষ্মী প্রসন্ন এবং সরস্বতীও, তারা সেই বিদ্যার দিকে নতুন নতুন পথ পাকা করচে প্রত্যহ, পণ্যের আদানপ্রদান চলচে দূরে নিকটে, ঘরে বাইরে। আমাদের দেশেও তো বিলম্ব করলে চলবে না।

 বাংলার আকাশে দুর্দ্দিন এসেচে চারদিক থেকে ঘন ঘোর ক’রে। একদা রাজদরবারে বাঙালীর প্রতিপত্তি ছিল যথেষ্ট। ভারতবর্ষের অন্যান্য প্রদেশে বাঙালী কর্ম্মে পেয়েচে খ্যাতি, শিক্ষাপ্রসারণে হয়েচে অগ্রণী। সেদিন সেখানকার লোকের কাছে সে শ্রদ্ধা পেয়েচে, পেয়েচে অকুণ্ঠিত কৃতজ্ঞতা। আজ রাজপুরুষ তার প্রতি অপ্রসন্ন, অন্যান্য প্রদেশে তার সম্বন্ধে আতিথ্য সঙ্কুচিত, দ্বার অবরুদ্ধ। এদিকে বাংলার আর্থিক দুর্গতিও চরমে এলো।

 অবস্থার দৈন্যে অশিক্ষার আত্মগ্লানিতে যেন বাঙালী নীচে তলিয়ে না যায়, যেন তার মন মাথা তুলতে পারে দুর্ভাগ্যের উর্দ্ধে, এই দিকে আমাদের সমস্ত চেষ্টা