পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/১০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সমাজ চিত্র
১০৯

 রাণী-মাসীর পাওনা আমি প্রায় শোধ করিয়াছিলাম, আমার আর কোন ঋণ ছিলনা। ঘরের জিনিষপত্র চলনসই রকম হইয়াছে। এই সময়ে আমার সঙ্গে একজন ভদ্রলোকের পরিচয় হয়। তিনি ব্রাহ্মণ যুবক, কোন ব্যাঙ্কের বিশিষ্ট কর্ম্মচারী ছিলেন। তাঁহার নাম শ্রী......পাধ্যায়। দুই তিন দিন আমার ঘরে আসিয়া তিনি আমার প্রতি আকৃষ্ট হইলেন। আমার গানেই তাঁহাকে বিশেষ রূপে মুগ্ধ করিল।

 তিনি আমাকে স্থানান্তরে লইয়া যাইবার প্রস্তাব করিলেন। তিনি বলিলেন “আমি তোমাকে একটু উঁচু ষ্টাইলে রাখতে চাই। হাড়কাটা গলিটা অতি অভদ্রের যায়গা— এখানে যত ছোট লোকের আমদানী।” আমি মনে মনে কহিলাম “হায়রে বেশ্যার আবার ভদ্রাভদ্র বিচার— পতিতার উচ্চ নীচ স্তর বিভাগ— এদেরও জাতিভেদ! এখনই অন্য স্থানে উঠিয়া গেলে আমার চিকিৎসক বাবুটিকে হারাইব এই ভাবিয়া আমি সন্মত হইলাম না। প্রকৃত কথা গোপন করিয়া বলিলাম, “আমার দেনাপত্র আছে— বাড়ীওয়ালীও কিছু টাকা পাবে, উঠতে হলে দু’চার মাস পরে উঠা যাবে।”

 এই ব্যাঙ্কের কর্মচারী মাঝে মাঝে আমার গৃহে রাত্রি যাপন করিতেন। তাঁহার সঙ্গে দুই একজন বন্ধুবান্ধাবও আসিত। সমান্য পরিমাণে মদ খাইতেন। তবে নিত্যান্ত মাতাল কেহ ছিলেন না। আমি কখনও কখনও লুচি, পরোটা, মাছ, মাংস প্রভৃতি সুখাদ্য প্রস্তুত করিয়া তাহাদিগকে খাওয়াইতাম। এইরূপে ক্রমে ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি পাইল। আমার এই বাবুটীর খুব পান খাওয়া