পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/১২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৩০
শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত

নানা অপব্যয় করিবার পর তাহার অংশ বিশেষ মাত্র কেন্দ্রীয় সমিতির তরবিলে পৌঁছিয়াছে। আমরা যাহা কিছু দিয়াছি, আচার্য্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় তাহাই সাদরে গ্রহণ করিয়াছেন। আমাদের টাকা লইতে সুনীতিবাদী ব্যক্তিদের আপত্তি ছিল; কিন্তু আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র তাঁহাদিগকে বুঝাইয়া মত করিলেন।

 ক্রমশঃ আমরা ভদ্র গৃহস্থ পরিবারের যুবক ও কুলবধুদের সহিত মেলামেশা করিবার অধিক সুযােগ পাইতে লাগিলাম। অবশ্য পূর্ব্বে যে তাহা ছিলনা এমন নয়। দ্বাদশ গােপাল, তারকেশ্বর, কালীঘাট প্রভৃতি তীর্থস্থানে ও মেলায় আমাদের অবাধ গতিবিধি ছিল, এখনও আছে। তাহাতে ও সমজের কিছু অবনতি ঘটিতেছে। তবে সে সকল স্থলে প্রত্যেকেই নিজ নিজ ধর্ম্মানুষ্ঠানে ব্যস্ত থাকে— পতিতা নারীদের সহিত অলাপ পরিচয় করিবায় বিশেষ প্রলােভন অথবা অবসর কাহারও ঘটেনা। কিন্তু এবার অসােহযােগ আন্দোলন উপলক্ষ্য করিয়া আমরা যে ভাবে বাহির হইলাম, তাহাতে ভদ্র পুরুষ ও মহিলাদের সহিত আমাদের কথাবার্ত্তা প্রয়োজন বশতঃ অনিবার্য্যই ছিল। মেলায় অথবা তীর্থস্থলে জনতার মধ্যে পতিতা নারীগণ বিক্ষিপ্ত অবস্থায় থাকে, তাহারা সাধারণের চক্ষে অমন জাজ্বল্যমান হয়না। কিন্তু আমরা ভিক্ষার ছলে অথবা পিকেটিং করিবার জন্য যেমন দলবদ্ধ হইয়া বাহির হইতাম, তাহাতে সর্বসাধারণের মুগ্ধদৃষ্টি আমাদের প্রতি আকৃষ্ট না হইয়া যাইত না।

 মহাত্মা গান্ধীর অসহযােগ আন্দোলনের অন্তর্গত আরও কয়েকটি প্রধান বিষয় ছিল,—অস্পৃশ্যতা দূর, চরকা ও খদ্দর। আমাদের পতিতা নারীসমাজে ইহার ফল কিরূপ হইয়াছিল, তাহা সংক্ষেপে