পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/১৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পঙ্কিল আবর্ত্তন
১৪৩

কেহই সফলকাম হন নাই। উপেন বাবু মদ্যপান নিবারণের জন্য বেশ্যাদের গৃহে পিকেটিং অনেকদিন চালাইয়াছেন। আমি যথাসাধ্য তাঁহার সাহায্য করিয়াছি।

 পূজার ছুটী, বড়দিনের অবকাশ প্রভৃতি উপলক্ষে মফস্বলের উকীল ও আফিসের কর্ম্মচারীগণ কলিকাতায় আসিয়া থাকেন। তখন আমাদের গৃহে তাঁহাদেরে অনেকের শুভাগমন হয়। যাঁহারা জমিদার ও ব্যবসায়ী তাঁহারা অন্য সময়েও আসিতে পারেন। অনেকে মফঃস্বল হইতে এখানে তাঁহাদের রক্ষিতাদিগকে মাস মাসে টাকা পাঠাইয়া থাকেন। নােয়াখালির এক রায়-বাহাদুর, বর্দ্ধমানের এক জমিদার, ঢাকার এক বড় ঔষধ ব্যবসায়ী, রংপুরের এক উকীল ইহাদের নিকট হইতে আমি মাসিক কিছু টাকা পাইতাম। চীৎপুরে বিশিষ্ট সােণার লেণের মেয়ে প্রভা নামে আমার এক বন্ধু আছে। ময়মনসিংহের এক উকীল তাহার বাবু, ঢাকার সেই ব্যবসায়ীর সহিত ইহার নাকি পরিচয় ছিল। সেই সূত্রে ঢাকার লোকটা আমার ঘরে আসিত। প্রভার বাড়ীতে কলিকাতার এক ব্যারিষ্টারে কুমারী কন্যাও আছেন। এইরূপে নিত্য নূতন লােক লইয়া সােনাগাছিতে আমার দিন কাটিতে লাগিল। বিশিষ্ট ঘরের পতিতা মেয়েদের সঙ্গে আমি একটু বেশী মেলামেশা করিতাম। এই ব্যারিষ্টার কন্যার মত নির্ভিক পতিতা আমি কম দেখিয়াছি।

 এই সময়ে একটি শােচনীয় দুর্ঘটনা আমার প্রত্যক্ষ হইল। আমি এস্থলে তাহার বর্ণণা করিতেছি। তাহাতে বুঝা যাইবে, কি ঘােরতর পাপ সমাজের মধ্য প্রবেশ করিয়াছে। ইহার প্রতিকার কিরূপে হইতে পারে তাহাও সমাজপতিদের ভাবিয়া দেখা কর্ত্তব্য।