পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/১৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪৪
শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত

 কলিকাতার মধ্যভাগে বাদুড়বাগান পল্লীর নিকট এক জমিদার বাস করে। তাহার পূর্ব্বপুরুষ নাকি সুপরিচিত বিখ্যাত ব্যক্তি। সেই জমিদার অতিশয় দুশ্চরিত্র। প্রতিবেশী গৃহস্থদের কুলবধূর উপর তাঁহার কুদৃষ্টি। তাঁহার দুষ্কার্যের সহায় কতকগুলি বন্ধু ও অনুচর আছে। ইহারা নানা কৌশলে গৃহস্থের কুলবধূদিগকে প্রলুব্ধ করিয়া প্রভুর কাম-লালসা তৃপ্তির জন্য লইয়া আসে। কখনও কলিকাতার প্রাসাদে, কখনও বা নিকটবর্ত্তী বাগান বাড়ীতে এই সকল পাপলীলার অনুষ্ঠান হয়।

 গৃহস্থের কুলবধূর কেহ প্রলােভনে স্বেচ্ছায় কেহ বা অনিচ্ছায় বাধ্য হইয়া আসিয়া থাকে। তাহারা অনেকেই গান জানে না, মদ্য পান ও করে না। এই প্রকার আমােদের জন্য সােনাগাছী অথবা রামবাগান হইতে পতিতা নারীদিগকে নেওয়া হইত। আমি এই জমিদারের বাগান বাড়ীতে দুই একবার গিয়াছিলাম। প্রতিরাত্রিতে এক শত টাকা লইতাম—গান গাওয়াই আমার কার্য্য ছিল। আমি মদ খাইতাম না। আরও দুই তিনটী বেশ্যা যাইত। তাহারাই মদ্য পানের আমােদে যােগ দিত।

 একরাত্রিতে জমিদারের বাগান বাড়ীতে আমার যাইবার ডাক পড়িল। আমি আমার পাওনা টাকাকড়ি অগ্রিম লইয়া রাত্রি আটটার সময় তথায় যাই। দেখিলাম, একটা সুন্দরী যুবতী কুলবধূকে আনয়ন করা হইয়াছে। তাহার বয়স ১৮/১৯ এইরূপ হইবে। গায়ের রং যেন কাঁচা সােণা—মুখখানি কোমল, লাবণ্য-মাখা; আমার প্রাণে বড় ব্যথা বাজিল। এই দুর্বৃত্ত জমিদারের পাপ প্রবৃত্তির কবলে কত সতীর বলিদান দেখিয়াছি। আমরাও