পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/১৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মিস্ মুখার্জ্জি
১৬৫

একটু তোয়াজ করিলেই সুস্থ হইতে পারিবেন। আমার আর তখন ভয় কি? তিনিও পবিত্র আমিও পবিত্র। তাঁহার মস্তক নিজ অঙ্কে স্থাপন করিয়া কেশগুলির মধ্যে অঙ্গুলি সঞ্চালন করিতে লাগিলাম। বলিলাম―যুবক বা যুবতীর মনের দৃঢ়তারও পরীক্ষা হওয়া আবশ্যক। প্যারিশ ছবিগুলির একটি ছবির প্রসঙ্গ তুলিয়া তাঁহার মানসপটে ভাবটি চিত্রিত করিয়া দিলাম, তিনি তৎক্ষণাং পার্শ্ব পরিবর্ত্তন করিলেন, আমি তাঁহার শোচনীয় অবস্থা অনুভব কহিয়া মনে মনে হাসিতে লাগিলাম। আমরা পিশাচী, পৈশাচিক আনন্দই আমাদের আনন্দ। তাঁহাকে এই পর্য্যন্ত পাপের পথে এগাইয়া দিয়া, তাঁহারই অনতিদূরে শয্যা রচনা করিয়া শয়ন করিলাম।

 পরদিন প্রভাতে কি দেখিলাম! একদিন পূর্ব্বে যিনি আমার সম্পূর্ণ অপরিচিত ছিলেন, যিনি কখনও কাহারও পাণিপীড়ন করিবেন না বলিয়া প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হইয়াছিলেন, তিনিই একরাত্রির মধ্যে আমার পরম ভক্ত, অনুগত দাসে পরিণত হইয়াছেন। যে নারী সর্পদ্রষ্ট অঙ্গুলির ন্যায় তাঁহার পরিত্যজ্য সেই নারী শিরোমণি আমি বারবিলাসিনী মানী, ওরফে মিস্ মুখার্জ্জি ভিন্ন তাঁর অন্ন রোচেনা। চা আসিল, বিস্কুট আসিল, নিষিদ্ধ পক্ষীর একজোড়া ডিম আসিল, কিন্তু তাঁহার মুগ্ধনেত্র আমার অনুসরণ করিতে লাগল। আমি যাইয়া যখন চা পানে রত হইলাম, তখন তিনি শীতল চা-টুকু ঢোকে ঢোকে গিলিতে লাগিলেন।

 বাড়ী ক্রয় করিবার জন্য দুইতিন মাসের মধ্যে বিশহাজার টাকা আমার হস্তগত হইল। আমার অঙ্গ মণি কাঞ্চনাদি নানা অলঙ্কারে ভূষিত হইল। অলঙ্কারে আমি আপত্তি করি-