পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কৈশোরে
৩৫

মহাশয় বলিলেন “মানু, ভগবান তোমায় রক্ষা করেছেন।” আমি তাঁহার হাতখানি ধরিয়া আবেগে উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে বলিলাম―মুকুল-দা আপনার স্নেহের ঋণ আমি শোধ করতে পারব না।”

 সেই হইতে অন্যের অসাক্ষাতে মাষ্টার মহাশয়কে ‘তুমি’ সম্বোধন আরম্ভ। আমাদের হৃদয় যেন পরস্পর অধিকতর নিকটবর্ত্তী হইল। একদিন তিনি একখানি সুন্দর বাঁধান ক্ষুদ্র কবিতা পুস্তক আমার হাতে দিয়া বলিলেন “মানু, আমার ‘ঝরণা’ ছাপা হয়েছে। তোমার সেবা করবার যে সুযোগ পেয়েছি, তাহাকে চিরস্মরণীয় করবার জন্য আমার এই প্রথম গীতিকাব্য তোমারই নামে উৎসর্গ করেছি।” আমি ঈষৎ লজ্জিতভাবে পুস্তকখানি লইয়া বলিলাম “মুকুলদা তুমি তোমার কবিতা ছাপাতে দিয়েছ, এ কথাত আমাকে কখনো বলনি! মাষ্টার মহাশয় হাসিয়া বলিলেন “ঐটী অপরাধ হয়েছে।”

 আমাকে ইংরাজী সাহিত্য পড়াইবার সময় মাষ্টার মহাশয় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কবিতা সমূহ বাংলা পদ্যে অনুবাদ করিয়া দিতেন। তিনি যে কবি ও ভাবুক তাহার পরিচয় পূর্ব্বে পাইয়াছিলাম। ‘ঝরণার’ অনেক কবিতা আমার সম্মুখেই লেখা হইয়াছিল। আজ পুস্তক আকারে গ্রথিত হওয়াতে উহার মধ্যে যেন নূতন ভাব দেখিতে পাইলাম।

 দিল্লী, আগরা, মথুরা, বৃন্দাবন, বোম্বাই, লাহোর, প্রয়াগ, কাশী, গয়া প্রভৃতি স্থান ভ্রমণ করিয়া বাবা পাঁচ মাস পরে কলিকাতায় ফিরিলেন। হাইকোর্ট খুলিবার পরেও দুইমাস তাঁহার কামাই হইল। ওকালতী ব্যবসা করিবার আর তেমন ইচ্ছা তাঁহার