পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

আমার কৈফিয়ৎ

 পুস্তকের নাম দেখিয়া অনেকেই হয়ত মনে করিবেন যে এই প্রকার জীবনী লিখিবার উদ্দেশ্য কি! মহৎ জীবনীর উদ্দেশ্য মহৎ হইলেও তাহা সমাজের পূর্ণ চিত্র নহে। আমার জীবন মোটেই মহৎ নহে, অধিকন্তু ঠিক তাহার বিপরীত; কিন্তু পুস্তকের উদ্দেশ্য মহৎ। আমি পাপী, কলঙ্কিনী, যশের প্রার্থী নহি―সুতরাং আমার জীবনের খাঁটি কথাগুলি আমি যেমন অকপটে বলিতে পারিব, কোন মহৎই তাঁহার জীবনের ঘটনা তেমন অকপটে বলেন নাই। বলিতে পারেন না। পাপের স্বরূপ চিনিয়া রাখা প্রয়োজন। পাপ জিনিষটা যে কি কৈশোরে তাহা বুঝিতে পারি নাই বলিয়াই আজ আমি―আমি কেন―আমার মত সহস্র সহস্র নারী পতিতা।

 বারবনিতা-জীবনে যে দুঃখ কষ্ট এবং অনুতাপ ভোগ করিয়াছি তাহারই স্মৃতি লইয়া এই পুস্তক রচিত হইয়াছে। যাঁহারা আমাদের জীবনকে সুখময় মনে করেন―আমাদের সংস্পর্শে আসিতে আগ্রহান্বিত তাঁহারা বুঝবেন এ পৃথিবীতে যদি নরক থাকে তবে তাহা আমাদের জীবন।

 আমি সমাজের ঘৃণীতা, অস্পৃশ্যা―সমাজে আমার স্থান নাই, স্থান থাকাও উচিত নহে, কিন্তু যে সকল সাধু-বেশী লম্পট আমাদের সংস্পর্শে থাকিয়াও সমাজের উচ্চস্থান অধিকার করিয়া আছেন, আমার জীবনীতে তাহাদেরও কতিপয় চিত্র দেখিয়া সমাজটাকে চিনিয়া রাখিতে পারিবেন। এই ভণ্ডের দল কি প্রকারে অবোধ বালিকার সর্বনাশ করে, তাহার চিত্র দেখিয়া স্তম্ভিত হইবেন।

 আমার এই আত্ম জীবনীতে ৺শিবনাথ শাস্ত্রী, ৺স্যার সুরেন্দ্র নাথ, ৺দেশবন্ধু দাশ, ৺ব্যোমকেশ চক্রবর্ত্তী, ৺অশ্বিনীকুমার দত্ত, পূজনীয়া