পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

৷৵৹

যাঁহাদের হাঁড়ি আজিও হাটে ফাটে নাই, তাঁহারাও বুঝিবা এই ফাটে ভয়ে চিৎকার করিতেছেন।”

 সুরুচির একনিষ্ঠ উপাসক, লব্ধপ্রতিষ্ঠ কোন এক মাসিকের পৌষ সংখ্যায় শ্লীলতার পরাকাষ্ঠার এক চিত্র বাহির হইয়াছে। উহাতে আছে তিন জোড়া যুবতীর স্তনের ছড়াছড়ি মাত্র। সুরুচি বাগীশ সম্পাদক মহাশয় শ্লীলতার মাপ কাঠি খানি কোথায় লাভ করিয়াছেন জানিতে কৌতুহল হয়। ইতিহাসের দোহাই দিয়া হয়ত সম্পাদক মহাশয় আত্মরক্ষা করিতে চাহিবেন; কিন্তু চিত্রে ইতিহাস টিকিবে কি?

 রাজাও নহেন ঋষিও নহেন এমন কোন ৺সমাজ সংস্কারক (?) যৎকালে যবন উপপত্নীর সঙ্গে উভয়ে উলঙ্গ অবস্থায় মদ্য পানে রত, ইহাদের তৎকালীন চিত্র সম্ভবতঃ উপরি উক্ত সম্পাদক মহাশয়ের চক্ষে অশ্লীল দেখাইবে; কিন্তু কেহ ত আজি পর্যন্ত তৎসম্বন্ধে কোন চিত্র প্রকাশ করিয়া ঐতিহাসিক তত্ত্ব আবিষ্কার অথবা রুচি জ্ঞানের পরিচয় দেন নাই।

 যে সমাজের সিদ্ধ মহাপুরুষকে এরূপ অবমাননাকর চিত্রে অঙ্কিত করা হইয়াছে বাঙ্গালায় তাঁহাদের লোক সংখ্যা অতি নগন্য। নতুবা এই স্পর্দ্ধা সম্ভব হইত কি? পতিতার পক্ষেও কথা বলিবার কেহ নাই বলিয়াই কি সুরুচিবাগীশের দল অমন লম্বা চওড়া স্পীচ্ ঝাড়িতে শুরু করিয়াছেন? এ চাল বাজিতে দেশের লোক আর ভুলিবে বলিয়া মনে হইতেছে না।

 দৈনিক বঙ্গবাণী ইঙ্গিত করিয়াছেন যে পণ্ডিত শ্যাম সুন্দর চক্রবর্ত্তী এই পুস্তকের লেখক এবং মনস্বী জিতেন্দ্রলাল বন্দ্যোপাধ্যায় পুস্তকের লভ্যাংশ পাইয়া থাকেন। পতিতা সমাজে যদি ইচ্ছাপূর্ব্বক কাহারও উপর মিথ্যা দোষারোপ করে―তাহার বিচার হয় সন্মার্জ্জনী দ্বারা―এই লেখক মহাশয় ‘পতিত’ কিনা না জানায় তাঁহাদের দলপতির উপর এই মিথ্যা উক্তির বিচারের ভার অর্পণ করিলাম।