পাতা:শিখ-ইতিহাস.djvu/১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

( iv ) মধ্যে নতুনত্বের সঞ্চার করেন। নানকের 'চরণ পাহুল পরিবর্তিত হয় অমৃত পাহুল । র্তার দীক্ষিত সম্প্রদায় খালসা নামে পরিচিত হয়ে ‘ওয়া গুরুজীক খালসা, ওয়া গুরুজীকা ফতহ' নীতি ঘোষণা করে। বংশ জাতি নিবিশেষে সকলেই "সিংহ" হবেন ( এই রীতি অদ্যাপি বহমান )। খালসাই গুরু, গুরুই খালসা—নীতির ফলে ব্যক্তিগুরুর মহিমা হ্রাস পেয়ে সম্প্রদায়গুরুর মহিমা বৃদ্ধি পেল। জীবনযাত্রার মধ্যে সংযম আনয়নের জন্যে তামাক সেবন নিষিদ্ধ হল । কেশ, কচ্ছ, কঙ্কণ, কৃপাণ ও কক্ষতিকা ( চিরুনী ) আবণ্ডিক হল । অন্তবৃত্তি ত্যাগ করে অসিবৃত্তি গ্রহণও আবশুিক হল । ধর্ম সম্প্রদায় পরিণত হল সামরিক সম্প্রদায়ে । ১৬১৫ খ্ৰীষ্টাব্দের পর থেকে তিনি জম্মু থেকে শ্রীনগর পর্যন্ত অবস্থিত পার্বত্য রাজদের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হন। এক আফগানের হাতে মৃত্যুর (১৭৭৮) পূর্বে তিনি বান্দাকে ( মনে রাখতে হবে গুরুর পদ অবলুপ্ত হয়েছে ) সামরিক নেতার পদে বৃত করেন। ধর্মের ভার দেন পঞ্চ শিখের উপর। বান্দা গুরু গোবিন্দের কাছে পাচটি শিক্ষা পেরেছিলেন নারী সঙ্গ না করে পবিত্র জীবন যাপন কর। সত্য-চিন্তা, সত্য-কথন ও সত্যকর্মে নিযুক্ত থাক, নিজেকে খালসার ভূত্য মনে করে সেইমত কাজ কর। কোনো সম্প্রদায় গঠন করে না এবং জয়লাভ যেন তোমার মধ্যে রাজকীয় অহঙ্কার স্বষ্টি না করে। শিখগণ বান্দার নেতৃত্বে সংগঠিত ও ঐক্যবদ্ধ হলেন। শিরহিন্দের মুঘল সেনাপতি গুরু গোবিদের শিশুপুত্রগণকে যে নির্মমভাবে হত্যা করে বান্দার প্রাণে তার যন্ত্রণ জাগরূক ছিল । প্রতিশোধস্পৃহ বান্দার আক্রমণে শিরহিন্দ ছারখার হয়ে যায়। বান্দার বিরুদ্ধে বাহাদুর শাহ, এবং মুনইম খাঁ দুজনেই এগিয়ে গেলেন। লৌহগড় দুর্গে বান্দাকে অবরোধ করলেন র্তার, কিন্তু বান্দা চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়ে গেলেন বাঙ্গার মতই দেখতে এক অম্লচরের স্বকৌশল আত্মদানের সাহায্যে। এর মধ্যে ১৭১২ খ্ৰীষ্টাব্দের বাহাদুর শাহের মৃত্যু হল। তার জ্যেষ্ঠপুত্র জাহাদার শাহের এগারো মাসের অপরিণত রাজ্য লাভের পর ফররুখসিয়র সিংহাসনে বসলে তার সঙ্গেও বান্দার বিরোধিতার অবসান হল না । শেষ পর্যন্ত বান্দাকে পরাস্ত হতে হল । সাধারণ শিখদের উপর অত্যাচার চলতেই থাকল । খালসা অবশু তাতে দমে গেল না। এর প্রত্যক্ষ ফল দেখা গেল নাদির শাহ-এর আক্রমণের পর ইরাবতী নদীর তীরে দালিওয়াল-এ একটি দুর্গ নির্মাণ-এ। শিখরা আবার পুনঃসংগঠিত হলেন । এই সংগঠনের কাজ পূর্ণ হল আহমদ শাহ আবদালীর পুনঃপুনঃ আক্রমণ—বিশেষ করে পাণিপথের তৃতীয় যুদ্ধের (১৭৬১ ) পর পঞ্জাবে মোগল শাসনের অবসানে ও শিখ অধিকার প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে। নতুন আশা ও সাহসে শিখের উজ্জীবিত হলেন । গেরিলা যুদ্ধের কৌশল অবলম্বন করে তারা আবদালীর পশ্চাদ-ধাবন করলেন। দেশোদ্ধার হল বটে, কিন্তু ঐক্যবদ্ধ শাসনব্যবস্থা সংগঠনের পূর্ণ শক্তি তখনও তার অর্জন