পাতা:শিখ-ইতিহাস.djvu/৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

રbr শিখ ইতিহাস প্রস্তর-লিঙ্গ পূজা করিয়া তখন আর কাহারও মনঃপ্রাণ তৃপ্ত হইত না ॥১৪ যিনি ধর্মতত্ত্বের মীমাংসায় জড়বাদী বৌদ্ধগণকে নীরব করিয়াছিলেন, যিনি নাস্তিক চার্বাকদিগের-৫ ধর্ম বিষয়ক ঘোর নাস্তিক্য মত খণ্ডন করিয়াছিলেন, এই সময়ে সেই শঙ্করাচার্যও গুণ এবং শক্তিসমূহের উপাসনা স্বীকার করিতে বাধ্য হইয়াছিলেন। এমন কি, শঙ্করাচার্যপ্রচারিত ধর্মেও প্রতিমা অৰ্চনা হইত, এবং দেব মন্দিরে মৃত্তিক বা প্রস্তরের দেব-মুতি অথবা মুতি-বিহীন নিদর্শন (শিবলিঙ্গ ) স্থাপনের ব্যবস্থা ছিল। যিনি আত্মস্বরূপ, র্তাহাকে আর কেহই উপাসনা করিত না। প্রকৃত ধর্মোপাসকগণ, পালনকর্তা ‘বিষ্ণু', সংহারকর্তা ‘শিব’, সূর্যের প্রতিনিধি দেবতা, এবং সিদ্ধি-বিধায়ক গণেশ প্রভৃতি দেবতার পূজা করিত ; অথবা, প্রকৃতির পুনরুৎপাদিকা শক্তিকেই দেবীরূপ কল্পনা করিয়া তাহার উপাসনা করিত। তাহারা মনে করিত যে, জগদীশ্বর নিশ্চয়ই তাহাঁদের প্রার্থনা শ্রবণ করেন এবং পুজা গ্রহণ করেন ।১৩ পুরাকালে ব্রাহ্মণগণ গৃহাশ্রমে অথবা নির্জনে ধর্মোপাসনা করিতেন। বৌদ্ধগণের ধর্মোপাসনা সাধারণ স্থানে অথবা ধর্মসভায় হইত। ব্রাহ্মণ-জাতীয় তপস্বিগণ জনসমাগম ১৪। হিন্দুদিগের শৈবধম অথবা "লিঙ্গ’ উপাসনার প্রথা জ্ঞানময় ব্রাহ্মণ্য ধমের একটা পরিবর্তনের নিদর্শন। যখন ব্রাহ্মণ্য ধম বিশেষ প্রাধান্ত লাভে জনসাধারণের ভ্রম-সংস্কার বিদূরিত করিয়া তাহাদিগকে পবিত্র করিবার চেষ্টা করিতেছিল, তখন এই পরিবর্তন সংসাধিত হয়। একাল পর্যন্তও ভারতের সাধারণ ব্যক্তিবর্গ প্রত্যেক বস্তুতেই ঈশ্ববের বিদ্যমানতার নিদর্শন দেখিয়া থাকে। ব্রাহ্মণগণ পৌত্তলিকদিগকে এই শিক্ষা প্রদান করিয়াছেন যে, উপাসনা সময়ে কাল প্রস্তরটকে নিরাকার বিশ্বনিয়ন্ত বলিয়া মনে করিক্তে হইবে। তাহার বৌদ্ধধমাবলম্বী মুর্তিউপাসকগণকেও ইন্দ্রিয় জ্ঞান সম্বন্ধে উপদেশ দিবার ক্ষমতা প্রদান করিয়াছেন। লিঙ্গই পুনরুৎপাদিকা শক্তির প্রতিরূপ,- এইরূপ জ্ঞান আধুনিক বলিয়া মনে হয়। এইরূপ ঈশ্বর জ্ঞান, অল্পসংখ্যক লোকের মধ্যেই প্রচলিত। ইহার দেবদেবীর সাধারণ স্বরূপ মুষ্ঠির মধ্যে অতর্কিম্ভ ভাবে এবং উচ্ছ,খলরূপে গুপ্ত শক্তির আবির্ভাব দেখিয়া থাকে। (Compare wilson, vishnoo JPooran' Preface lxiv ). ১৪। অধ্যাপক উইলসন ( "Asiatic Researches', xvi. 18.) চাৰ্বাক নামক কোন যোগী ৰ৷ মুনির নাম হইতে এই 'চার্বাক' সম্প্রদায়ের উপাধি নিম্পন্ন করিয়াছেন। কিন্তু ব্রাহ্মণগণ. (অন্ততঃ মালবের ব্রাহ্মণগণ), এই সম্প্রদায় এবং সম্প্রদায়ের গুরু,—এতদুভয়ের এই বিশেষ নাম, ‘চারু (প্রবৃত্তি জনক, অত্যুত্তম) এবং বাক' ( বাক্য, বক্তৃতা ) শব্দদ্বয় হইতে নিম্পন্ন করিয়া থাকেন। এইরূপে নিম্পাদিত হইলে, এই সম্প্রদায়টা তার্কিক, ভাষাবিদ কিংবা প্রতারক বলিয়া বর্ণিত হয়। বস্তুত, পরিশেষে সম্প্রদায়ট এই নামেই পরিচিত হইয়াছিল। এই সম্প্রদায়ের সকলেই ঘোর জড়বাদী ; তাহারা শারীরিক উপাদান সমুহের নির্দিষ্ট কোন অবস্থা অথবা অবস্থা-সমুহের একত্রীকরণের নিয়ম হইতে বিবেক-শক্তির উৎপত্তি স্বীকার করিয়ু থাকে। মনে হয়, এ সম্বন্ধে তাহার প্রসিদ্ধ শরীরতত্ত্ববিৎ ডাক্তার লরেন্সের মত অনুভৰ করিয়াছিল। ডাক্তার লরেন্সের ধারণা এই যে, যকৃত যেমন পিত্তের আধার, তেমনি মস্তিষ্কও চিত্ত৷ *fig off; I (Compare Wilson, 'As. Res.” xvii. 303 and Troyer’s ‘Dabistan’, ii 198. note.) ১৬। যে পাঁচটি জাতির বিবর বর্ণিত হইয়াছে, তাহারা সকলেই হিন্দুধর্মের বিশুদ্ধ দলের মধ্যে শ্ৰেষ্ঠতম। -