পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/১১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১২
শি বা জী

আসিতেছের, মারাঠা-সৈন্য সুরতের পঞ্চাশ ক্রোশ দক্ষিণে কোলী-দেশে ঢুকিয়াছে—এই সব জনরব ঘন ঘন সুরতে পৌঁছিতে লাগিল। আর অমনি লোকজন শহর ছাড়িয়া পলাইতে সুরু করিল, এবং দেখিতে দেখিতে সেই প্রকাণ্ড বন্দর মরুদেশের মত নির্জ্জন নিস্তব্ধ হইয়া পড়িল। ইংরাজ ও অন্যান্য সাহেব-বণিকেরা নিজ কুঠী খালি করিয়া টাকা ও মাল তাড়াতাড়ি সুহায়িলীতে পাঠাইয়া দিলেন।

 বৎসরের পর বৎসর এইরূপ ঘটিতে লাগিল। ফলে ভারতের সর্ব্বশ্রেষ্ঠ বন্দরের বাণিজ্য ও সমৃদ্ধি একেবারে লোপ পাইল।

ডিণ্ডোরীর যুদ্ধ

 ৫ই অক্টোবর সুরত হাড়িয়া শিবাজী দক্ষিণ-পূর্ব্বে বগলানা প্রদেশে প্রবেশ করিলেন এবং মূলের দুর্গের নীচের গ্রামগুলি লুঠিতে লাগিলেন। ইতিমধ্যে শাহজাদা মুয়জ্জম দিলির খাঁর পিছু লইয়া প্রায় বুর্হানপুর পর্য্যন্ত যাইবার পর বাদশাহর হুকুমে সেখান হইতে সবেমাত্র আওরঙ্গাবাদে ফিরিয়াছেন, এমন সময় তিনি দ্বিতীয়বার সুরত-লুঠের সংবাদ পাইলেন। তিনি অমনি দাউদ খাঁকে মারাঠাদের বিরুদ্ধে পাঠাইলেন। দাউদ খাঁ চান্দোর-দুর্গের কাছে পৌঁছিয়া শুনিলেন যে, সেখান হইতে পাঁচ ক্রোশ পশ্চিমে ঐ লম্বা গিরিশ্রেণীর মধ্যে একটা সরু পথ দিয়া শিবাজী বগলানা হইতে নামিয়া উত্তর-মহারাষ্ট্রে(অর্থাৎ নাসিক জেলায়) ঢুকিবেন। মধ্যরাত্রে মুঘলদের চরেরা আসিয়া পাকা খবর দিল যে, শিবাজী ঐ গিরিসঙ্কট পার হইয়া অর্দ্ধেক সৈন্য লইয়া নাসিকের দিকে দ্রুত অগ্রসর হইতেছেন, আর তাঁহার বাকী অর্দ্ধেক সৈন্য মাল ও পশ্চাৎ রক্ষা করিবার জন্য ঐ গিরিসঙ্কটের মুখে দাঁড়াইয়া আছে।

 দাউদ খাঁ তৎক্ষণাৎ আবার অগ্রসর হইলেন। সেদিন কার্ত্তিক শুক্লচতুর্দ্দশী; তৃতীয় প্রহর রাত্রিতে চাঁদ ডুবিল, এবং অন্ধকারে মুঘল