লোকেরা ভয়ে শিবাজীকে লিখিয়া দিল যে, তাহারা বৎসর বৎসর তাঁহাকে চৌৎ, অর্থাৎ বাদশাহী খাজানার এক-চতুর্থাংশ, কর দিবে।
মুঘলেরা উপযুক্ত কোনই বাধা দিতে পারিল না। বেরারের বাদশাহী সুবাদার অলস ধীর নবাবী চালে চলেন, আর খান্দেশের সুবাদার এবং কুমার মুয়জ্জমের মধ্যে এমন ঝগড়া ছিল যে যুদ্ধ বাধে আর কি!
শিবাজী স্বয়ং যখন বেরারে যান তখন আর একদল মারাঠা সৈন্য পেশোয়া মোরো ত্র্যম্বকের অধীনে পশ্চিম-খান্দেশ লুঠিতে থাকে। এখন শিবাজী ফিরিয়া আবার বগলানায় আসিলে, এই দল তাঁহার সহিত যোগ দিয়া বিখ্যাত সালের-দুর্গ জয় করিল (৫ই জানুয়ারি ১৬৭১), এবং মুলের, ধোডপ প্রভৃতি অন্যান্য বড় পার্ব্বত্য দুর্গ অবরোধ করিল, গ্রাম লুঠিল, শস্য চলাচল বন্ধ করিল। ফলতঃ এই অঞ্চলে মুঘলেরা অতিষ্ঠ হইয়া উঠিল, অথচ তাহাদের আত্মরক্ষার মত বল বা বড় নেতা কেহ নাই।
শিবাজী ও ত্রিশাল বুন্দেলার সাক্ষাৎ
১৬৭০ সালের শেষভাগে যখন এই-সব যুদ্ধ চলিতেছিল,তখন বিখ্যাত বুন্দেলা রাজা চম্পৎ রায়ের পুত্র ছত্রশাল শিবাজীর সঙ্গে দেখা করিতে আসিলেন। ইনিই পরে পান্না-রাজ্য এবং ছত্রপুর শহর প্রতিষ্ঠা করিয়া, দীর্ঘকাল রাজদ্ধের পর ১৭৩৯ সালে মারা যান। কিন্তু এ সময় তিনি তরুণ যুবক মাত্র এবং পাক্ষিণাত্যে মুঘল সৈন্যদলে অল্প বেতনের মনসবদার। এরূপ চাকরিতে অসন্তুষ্ট হইয়া ছত্রশাল একদিন শিকারের ভাণ করিয়া সস্ত্রীক মুঘল-শিবির হইতে বাহির হইয়া পড়িলেন, এবং ঘোরা পথ দিয়া মহারাষ্ট্রে পৌঁছিয়া শিবাজীর অধীনে বাদশাহর সঙ্গে যুদ্ধ করিবার জন্য সেনাপতির পদ চাহিলেন। কিন্তু শিবাজী দক্ষিণী ভিন্ন ভারতের অন্য প্রদেশের লোককে বিশ্বাস করিতেন না অথবা উচ্চপদ