পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/১৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রাজ্যাভিষেক
১২৯

 শুধু তাঁহার জীবনের এই পূর্ণ সফলতা দেখাইবার জন্যই যেন ভগবান জীজা বাঈকে এতদিন পর্য্যন্ত বাঁচাইয়া রাখিয়াছিলেন, কারণ, শিবাজীর অভিষেকের বারো দিন পরেই তাঁহার আত্মা আশী বৎসর বয়সে পৃথিবী ছাডিয়া চলিয়া গেল।

তীর্থদর্শন ও প্রায়শ্চিত্ত

 তাহার পর শিবাজা তীর্থ-ভ্রমণে বাহির হইয়া চিপ্‌লুন তীর্থে পরশুরামের পূজা করিলেন এবং প্রতাপগড়ে গিয়া নিজ ইষ্ট দেবী ভবানীকে সওয়া মণ ওজনের সানার ছাতা উপহার দিয়া আরাধনা করিলেন। ২৯এ মে রায়গড়ে ফিরিয়া অনেক দিন ধবিয়া প্রত্যহ স্থানীয় দেব-দেবীর পূজায় ব্যস্ত রহিলেন।

 তাঁহার পূর্ব্বপুরুষগণ ক্ষত্রিয়াচার ন করিয়া যে পতিত (বা শূদ্র) হইয়াছিল, তাহার জন্য শিবাজী ২৮মে প্রায়শ্চিত্ত করিলেন; এবং গাগা ভট্ট তাঁহাকে উপবীত পরাইয়া ক্ষত্রিয় করিয়া দিলেন। তখন শিবাজী বলিলেন,“আমি দ্বিজ হইয়াছি; সকল দ্বিজের বেদাধিকার আছে, সুতরাং আমার ক্রিয়াকাণ্ডে বৈদিক মন্ত্র পড়িতে হইবে।” ইহা শুনিয়া সমবেত ব্রাহ্মণেরা বিদ্রোহী হইয়া উঠিল, বলিল, “কলিযুগে ক্ষত্রিয় জাত লোপ পাইয়াছে, এখন ব্রাহ্মণ ভিন্ন আর কেহ দ্বিজ নহে।” তাহারা টাকার লোভে ভোঁশলে বংশকে ক্ষত্রিয় বলিয়া স্বীকার করিয়াছিল, নচেৎ অভিষেক হয় না, আর ব্রাহ্মণেরা এত লক্ষ টাকার দক্ষিণা ও সিধা পায় না। কিন্তু এখন তাহাদের প্রথম মতের ন্যায়সঙ্গত ফল দেখিয়া তাহারা ক্ষেপিয়া উঠিল। স্বয়ং গাগা ভট্টও ভয় পাইলেন, এবং একটা গোঁজামিল দিয়া তাড়াতাড়ি গোলমাল মিটাইয়া ফেলিলেন। অভিষেকে বৈদিক