পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/১৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪৬
শিবাজী

শিবাজীকে কর্ণাটক জয়ে সাহায্য করিবেন। শিবাজী প্রতিজ্ঞা করিলেন, কর্ণাটকের যে যে অংশ তাহার পিতা শাহজীর ছিল তাহা বাদে জয় করা সমস্ত দেশ কুতুব শাহকে দিবেন। এ ছাড়া তিনি কুতুব শাহর সম্মুখে ধর্ম্মশপথ করিয়া বলিলেন যে মুঘলেরা আক্রমণ করিলেই তিনি গোলকুণ্ডা-রাজ্য রক্ষা করিতে ছুটিয়া আসিবেন। তজ্জন্য কুতুব শাহ পূর্ব প্রতিশ্রুতি-মত বার্ষিক কর পাঁচ লক্ষ টাকা নিয়মিতভাবে দিতে থাকিবেন বলিয়া আশ্বাস দিলেন।

 গোপনে এই-সব মন্ত্রণা ও বন্দোবস্ত চলিতে লাগিল, আর বাহিরে আমোদ-প্রমোদ তামাশা ও ভোজে মারাঠা এবং নগরবাসীদের সময় সুখে কাটিতে লাগিল। শিবাজী দ্বিতীয়বার কুতুব শাহর সহিত দেখা করিলেন; দুই রাজা প্রাসাদের বারান্দায় পাশাপাশি বসিলেন, আর সমস্ত মারাঠা-সৈন্য কুচ করিয়া তাঁহাদের সামনে দিয়া চলিল; গোলকুণ্ডার সুলতান তাহাদের নানা উপহার দিলেন। শিবাজীর ঘোড়াকে পর্যন্ত একটি মণি ও হীরার মালা গলায় পরাইয়া দেওয়া হইল, কারণ সে-ও তাঁহার যুদ্ধজয়ে সঙ্গী ছিল।

 আর একদিন কুতুব শাহ জিজ্ঞাসা করিলেন, “আপনার কয় শত হাতী আছে?” শিবাজী তাহার হাজার হাজার মাবুলে পদাতিক সৈন্য দেখাইয়া দিয়া বলিলেন, “ইহারাই আমার হাতী।” তখন সুলতানের একটি প্রকাশ মত্ত হস্তীর সহিত মাবুলে সেনাপতি যসাপ্পজী কঙ্ক তরবারি লইয়া যুদ্ধ করিলেন, এবং উহাকে কিছুক্ষণ ঠেকাইয়া রাখিয়া শেষে এক কোপে উহার শুভ কাটিয়া ফেলিলেন। হাতী পরান্ত হইয়া পলাইয়া গেল।

 এইরূপে এক মাস কাটাইবার পর টাকা ও মালপত্র লইয়া শিবাজী মার্চ মাসের প্রথমে হায়দারবাদ ত্যাগ করিলেন। দক্ষিণ দিকে গিয়া