পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/১৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৭০
শিবাজী

হাজার সৈন্য মারা পড়ে, সেনাপতি হান্বীর বাও আহত হন, এবং অনেক সৈন্য মুঘলদের হাতে বন্দী হয়।

 লুঠের জিনিষ সমস্ত ফেলিয়া দিয়া মাত্র পাঁচশত বক্ষীর সহিত শিবাজী অবসন্নদেহে পাট্টা দুর্গে পৌঁছিলেন (২২ নবেম্বর)। ইহা নাসিক শহবের ২০ মাইল দক্ষিণে এবং তলঘাট স্টেশনের ২০ মাইল পূর্ব্বে। এখানে কিছু দিন বিশ্রাম করিবার পর আবার তিনি চলিবার শক্তি ফিরিয়া পাইলেন, এজন্য পাট্টাকে “বিশ্রামগড” নাম দিলেন।

শেষ পারিবারিক বন্দোবস্ত

 ইহার পর ডিসেম্বর মাসের প্রথমে তিনি রায়গডে গিয়া সেখানে তিন সপ্তাহ কাটাইলেন। শম্ভুজী পনহালাতে ফিরিয়া আসায় (৪ঠা ডিসেম্বর), শিবাজী স্বয়ং সেই দুর্গে জানুয়ারির প্রথমে গেলেন। নবেম্বরের শেষ সপ্তাহে একদল মাঠা-সৈন্য খাদেশে ঢুকিয়া ধরণগাঁও, চোপরা প্রভৃতি বড় বড় বাজার লুঠিয়াছিল।

 জ্যেষ্ঠ পুত্রের চরিত্র ও বুদ্ধির কথা ভাবিয়া শিবাজী নিজ রাজা ও বংশের ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে হতাশ হইলেন। তাঁহাব নানা উপদেশ ও মিষ্ট কথায় কোন ফল হইল না। শিবাজী পুত্রকে নিজের বিশাল রাজ্যের সমস্ত মহাল দুর্গ ধনভাণ্ডার অশ্ব গজ ও সৈন্যদলের তালিকা দেখাইলেন এবং সৎ ও উচচমনা রাজা হইবার জন্য নানা উপদেশ দিলেন। শম্ভুজী পিতার কথা শুধু চুপ করিয়া শুনিয়া উত্তর দিলেন, “আপনার যাহা ইচ্ছা তাহাই হউক।” শিবাজী স্পষ্টই বুঝিলেন তাহার মৃত্যুর পর শম্ভুজীর হাতে মহারাষ্ট্র রাজ্যের কি দশা হইবে। এই দুর্ভাবনা ও হতাশা তাঁহার আয়ু হ্রাস করিল। শম্ভুজীকে আবার পনহালা-দুর্গে বন্দী করিয়া রাখা হইল, এবং শিবাজী রায়গড়ে ফিরিয়া আসিলেন (ফেব্রুয়ারি ১৬৮০)। তাঁহার দিন ফুরাইয়া আসিয়াছে বুঝিয়া, শিবাজী তাড়াতাডি কনিষ্ঠ পুত্র