পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৪
শিবাজী

নিজ প্রভুর দিকে ছুটল। সৈয়দ বান্দা তাহার লম্বা সোজা তলোয়ার (পাট্টা) দিয়া এক কোপে শিবাজীর মাথার পাগড়ী কাটিয়া ফেলিল। তলোয়ারের ঘায়ে শিবাজীর পাগড়ীর নীচের লোহার টুপিটা পর্যন্ত টোল খাইয়া গেল, কিন্তু মস্তক রক্ষা পাইল। তিনি জীব মহালার হাত হইতে একখানি তলোয়ার লইয়া সৈয়দ বান্দাকে ঠেকাইতে লাগিলেন। মহালা পাশ কাটাইয়া আসিয়া প্রথমে সৈয়দের ডান হাত ও পরে মাথা কাটিয়া ফেলিল। ইতিমধ্যে বাহকেরা আহত আফজলকে পালকীতে শোয়াইয়া তাঁহার শিবিরে লইয়া যাইবার চেষ্টা করিল। কিন্তু শম্ভুজী কাব্‌জী আসিয়া তাহাদের পায়ে কোপ মারায় তাহারা পালকী ফেলিয়া ছুট দিল। তখন শম্ভুজী আফজল খাঁর মাথা কাটিয়া বিজয়-গর্ব্বে তাহা শিবাজীর কাছে হাজির করিল।

আফজলের সৈন্য পরাজিত ও লুণ্ঠিত হইল

 আফজল খাঁর মৃত্যুর পর অমনি শিবাজী তাঁহার রক্ষী দুইটির সহিত দৌড়াইয়া পাহাড় বাহিয়া প্রতাপগড় দুর্গে উঠিলেন এবং সেখান হইতে তোপধ্বনি করিলেন। এই সঙ্কেত আগে হইতেই স্থির করা ছিল। তোপের শব্দ শুনিবামাত্র পার গ্রামের নিকট ঝোপ ও পর্ব্বতের মধ্যে যেখানে শিবাজীর দুই দল সেনা লুকাইয়াছিল, সেখান হইতে তাহারা বাহির হইয়া চারিদিক দিয়া বিজাপুরী সৈন্যদের আক্রমণ করিল। আফজলের আকস্মিক মৃত্যুর সংবাদে তাঁহার শিবিরের কর্ম্মচারী সিপাহী ও লোকজন একেবারে হতভম্ব হইয়া গিয়াছিল। তাহাদের নেতা নাই, পথঘাট অপরিচিত, অথচ অগণিত শত্রু চারিদিক ঘিরিয়া আছে। পলাইবার পথ বন্ধ; সুতরাং, তাহারা হতাশ হইয়া যুদ্ধ করিল। কিন্তু মারাঠারা আজ বিজয়-উল্লাসে উন্মত্ত, দুইজন নামজাদা সেনাপতি তাহাদের চালনা করিতেছেন, যুদ্ধের স্থান তাহাদের সুপরিচিত। তাহারা অদম্য বেগে