পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

চতুর্থ অধ্যায়

পাঁচ বৎসর ধরিয়া যুদ্ধ, ১৬৬০-১৬৬৪

শিবাজীর দক্ষিণ-মহারাষ্ট্রে প্রবেশ

আফজল খাঁর মৃত্যু (১০ই নবেম্বর ১৬৫৯) এবং তাঁহার সৈন্যদল বিধ্বস্ত হইবার পর, শিবাজী দক্ষিণে কোলাপুর জেলায় প্রবেশ করিয়া দেশ লুঠিতে লাগিলেন। ২৮এ নবেম্বর তিনি পন্‌হালা নামক বিশাল গিরিদুর্গ অধিকার করিলেন। তাঁহাকে বাধা দিবার জন্য স্থানীয় শাসনকর্ত্তা রুস্তম-ই-জমান বিজাপুররাজের আদেশে অগ্রসর হইলেন; আফজলের পুত্র ফজল খাঁ পিতৃহত্যার প্রতিশোধ লইবার জন্য রুস্তমের সহিত সসৈন্য মিলিত হইলেন। কিন্তু রুস্তম জানিতেন, বিজাপুরের কর্ত্রী-রাণী বড়ী সাহিবা গোপনে তাঁহার উচ্ছেদের চেষ্টায় আছেন, এ অবস্থায় তাঁহার আত্মরক্ষার একমাত্র উপায় শিবাজীর সহিত সদ্ভাব বজায় রাখা;—বিশেষতঃ শিবাজীর বংশের সহিত তাঁহার দুই পুরুষ ধরিয়া বন্ধুত্ব। সুতরাং রুস্তম শিবাজীর সহিত ষড়যন্ত্র করিয়া শুধু লোক দেখাইবার জন্য তাঁহার বিরুদ্ধে সৈন্য চালনা করিলেন। কোলাপুর শহর হইতে কিছু দূরে দুই পক্ষে সংঘর্ষ হইল। রুস্তম গা ঢিলা দিয়া পিছনে থাকিলেন; ক্রুদ্ধ ফজল খাঁ যুদ্ধের সমস্ত ভার নিজের উপর লইয়া প্রবল বেগে মারাঠাদের আক্রমণ করিলেন (২৮এ ডিসেম্বর)। তাঁহার অনেক লোক যুদ্ধে মারা গেল, দু’হাজার ঘোড়া ও বারোটী হাতী ধরা পড়িল; পরাস্ত হইয়া ফজল খাঁ বিজাপুরে ফিরিলেন। আর রুস্তম পিছু হটিয়া নিজ জাগীর দক্ষিণ-কানাড়ায় গিয়া চুপচাপ বসিয়া রহিলেন।