পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পাঁচ বৎসর ধরিয়া যুদ্ধ, ১৬৬০-১৬৬৪
৫৩

পর তাহারা আর মারাঠী দুর্গ আক্রমণ করিতে একেবারেই ইচ্ছুক হইল না। শায়েস্তা খাঁ শীঘ্রই পুণায় ফিরিয়া আসিয়া ছাউনি করিলেন।

 ১৬৬১ সালের প্রথমে তিনি উত্তর-কোঁকন অধিকার করিবার জন্য একদল সৈন্য পাঠাইলেন। ইহাদের নেতা—চার হাজারী মন্‌সবদার কার্‌তলব্‌ খাঁ উজবক্ যখন উম্বখিণ্ড নামক স্থানে পথহীন পাহাড় জঙ্গলের মধ্যে তোপ মালপত্র ও রসদ লইয়া বিব্রত, শিবাজী সেই সময় দ্রুতবেগে গুপ্তপথে আসিয়া তাঁহাকে ঘেরাও করিলেন, এবং জলাশয়ে যাইবার পথ বন্ধ করিয়া দিলেন। খাঁ তখন শিবির ও সম্পত্তি সমস্তই শিবাজীকে সমর্পণ করিয়া প্রাণ ভিক্ষা লইয়া সৈন্যসহ ফিরিয়া আসিলেন (৩রা ফেব্রুয়ারি, ১৬৬১)।

 পনহালা ও চাকন হারাইয়া যে ক্ষতি হইয়াছিল, বিজয়ী শিবাজী এখন তাহা পূরণ করিবার জন্য দক্ষিণ-কোঁকনে প্রবেশ করিলেন। সেনাপতি নেতাজী পালকরের অধীনে একদল মারাঠা মুঘলদিগের বিরুদ্ধে উত্তর দিকে মোতায়েন রহিল। অপরদল লইয়া শিবাজী স্বয়ং বিজাপুরের অধীন দক্ষিণ-কোঁকন (বর্ত্তমান রত্নগিরি জেলা) অধিকার করিলেন। সেখানে শুধু খণ্ডরাজ্যের পর খণ্ডরাজ্য; এমন কোন একজন প্রবল প্রতাপশালী প্রাদেশিক শাসনকর্ত্তা ছিল না যে শিবাজীর গতি রোধ করিতে পারে। শিবাজী এত দ্রুতবেগে অগ্রসর হইলেন যে অনেক স্থানীয় রাজা জমিদার আত্মরক্ষার আয়োজনের অবসর পাইল না,—তাড়াতাড়ি সব ছাড়িয়া প্রাণ লইয়া পলাইয়া গেল। আর সকলে কর দিয়া তাঁহার বশ্যতা স্বীকার করিল।

 এইরূপে জঞ্জিরা হইতে খারেপটন পর্য্যন্ত পশ্চিম-সমুদ্রের কূলবর্ত্তী সমস্ত অঞ্চল তাঁহার হাতে পড়িল। সর্ব্বত্রই তাঁহার পক্ষ হইতে লুটপাট