পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৪
শিবাজী

সরিয়া পড়িল। পরদিন ইংরাজেরা কয়েকজন নিজের লোক পাঠাইয়া ঐ বণিকের বাড়ী রক্ষার ভার লইল। এইরূপ ধনের খনি হাত-ছাড়া হওয়াতে শিবাজী চটিয়া ইংরাজ-কুঠিতে বলিয়া পাঠাইলেন, “হয় আমাকে তিন লক্ষ টাকা দাও, না হয় হাজী সাইদের বাড়ী লুঠিতে দাও। নতুবা আমি স্বয়ং আসিয়া, তোমাদের সকলের গলা কাটিব এবং কুঠী ভূমিসাৎ করিয়া দিব।” সুচতুর ইংরাজ-নেতা উত্তর দিবার জন্য কিছু সময় চাহিয়া লইয়া শনিবার প্রাতঃকাল (অর্থাৎ চতুর্থ দিন) পর্য্যন্ত কাটাইলেন, তাহার পর শিবাজীকে খবর পাঠাইলেন—“আমরা দুইটি শর্ত্তের কোনটিতেই রাজি নহি; আপনি যাহা করিতে পারেন করুন; আমরা প্রস্তুত আছি, পলাইব না। যে সময় ইচ্ছা এই কুঠী আক্রমণ করুন। আর, এই কুঠী লইবার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞা করিয়াছেন, বলিতেছেন; বেশ ত, যখন আসিবার ইচ্ছা করিয়াছেন তাহার এক প্রহর আগেই আসিবেন।” শিবাজী আর কিছুই করিলেন না; তিনি সুরত হইতে অবাধে এক কোটির অধিক টাকা পাইয়াছেন, তবে আর কেন দুই-এক লাখের জন্য স্থির দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ইংরাজদের তোপের মুখে নিজ সৈন্য নষ্ট করিবেন?

মারাঠাদের সুরতে অত্যাচার ও খুন

 সুরত-লুণ্ঠনের ফলে অগণিত ধন লাভ হইল। বহু বৎসরেও এই সময়ের মত অর্থ রত্ন ইত্যাদি শহরে সংগৃহীত হয় নাই। মারাঠারা সোনা, রূপা, মোতি হীরা ও রত্ন ভিন্ন আর কিছুই ছুঁইল না।

 মারাঠারা সুরতবাসীদের ধরিয়া আনিয়া কোথায় তাহারা নিজ নিজ ধন-সম্পত্তি লুকাইয়া রাখিয়াছে তাহার সন্ধানের জন্য কোন প্রকার নিষ্ঠুর পীড়নই বাকী রাখিল না; চাবুক মারা হইল, প্রাণ বধের ভয় দেখান হইল, কাহারও এক হাত কাহারও বা দুই হাত কাটিয়া ফেলা হইল,