পাতা:শিশু-ভারতী - তৃতীয় খণ্ড.djvu/১৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শঙ্করাচার্ল্য ---- তাহাকে দীক্ষা দান করিলেন এবং ধন্মের নিগৃঢ় তত্ত্ব সম্বন্ধে শিক্ষা দিতে লাগিলেন । শঙ্কর এইখানে কিছুকাল অবস্থান করিয়া গুরুর আদেশে কাশীধাম গমন করেন এবং সেখানে যাইয়া ব্যাসকৃত ব্ৰহ্ম স্থত্রের ভাষা প্রণয়ন করেন। এ সময়ে বহুলোক ঠাহীর সহিত ধৰ্ম্মালোচনা করিতে অলিত। যাহারা তাহার নিকট শাস্ত্র বিচারার্থ আগমন করিতেন, ওঁeিার পরিশেষে শঙ্কবাচার্য্যের নিকট তর্কযুদ্ধে পরাজত হইয় তাহার শিষ্যত্ব গ্রহণ করিতেন। এ সময়ে শঙ্কর বেদী স্তমত ঘোষণা করিবার জন্য দেশ ভ্রমণে বাহিব হইলেন । সে সময়ে তীর্থরাজ প্রয়োগে বৌদ্ধবিজয়ী কুমাপিল ভট্ট নামে একজন পণ্ডিত বাস করিতেন । ভট্ট প্রকৃত পক্ষেই অসাধারণ পণ্ডিত ছিলেন। শঙ্কর যখন তাহাব নিকট বিচারার্থিকপে উপস্থত যইগেন, তখন তিনি বলিলেন—তুমি যদি আমার শিলা ম গুনমিশের সহিত বিচার প্রবৃত্ত হইয়। তাছাকে পবাস্ত কপিতে পার, তাহা হইলে আমি ও পরাজিত হইলাম, এইরূপ স্বীকার করিয়া লইব । কিন্তু এই বিচারের মধাস্থত। কবিবেন তাহীর পত্নী উভয় ভারতী। উভবভারতী বিদ্যা-বুদ্ধিতে দেবী সরস্বতীর তুলা । শঙ্কব কুমাধিল ভট্টের কথা মানিধা লইলেন এবং মণ্ডনগিশ্রেীর সহিত তর্ক কপ্লিবীর উদ্দে: ) মাখিয়তী নগরে যাইয়। উপস্থিত হইলেন। উভয় পক্ষে অষ্টাদশ দিবস পর্য্যন্ত শাস্ত্রালাপ চলিয়াছিল। উভয় ভারতী মধ্যস্থা ছিলেন। বিচারে মওনমিশ্র পরাজিত হইলেন। উভয়ভাবতী, শঙ্কবের লছিত তর্কযুদ্ধে স্বামীর পরজয় হইল দেখিতে পাইয়া শঙ্করের সহিত গার্হস্থ্য ধৰ্ম্মনীতি সম্বন্ধে তর্ক করিতে আরম্ভ করিলেন । শঙ্কব সম্ৰাণী—তিনি গৃহধৰ্ম্মের সম্বন্ধে কি জানেন ? কাজেই তাছাকে পরাজিত হইতে হইল। শঙ্কর উভয় ভাবতীর নিকট হইতে একমাসকাল সময় গ্রহণ করিয়া বলিলেন যে, পরে আমি আপিয়া আবার আপনার সহিত গৃহধৰ্ম্মনীতি সম্পর্কে তর্ক কবিৰ । একমাস পলে শঙ্কর যখন মগুনমিশের গৃহে আগমন করিলেন, তখন উভয় ভারতী বিচারে আর প্রবৃত্ত হইলেন না, তাহার নিকট পরাজয় স্বীকার কবিলেন। অতঃপর শঙ্কর নানাদেশ ভ্রমণ করিয়! শ্ৰীঙ্গেরীতে গমন করিয়া সেখানে কিছুকাল বাস করেন। এ সময়ে র্তাহার শিষোর নানাগ্রন্থ রচনা করিতে প্রবৃত্ত হইয়াছিলেন। কিছুকাল ঐ স্থাণে বাস করিয়া স্নেহময়ী জননীকে দেখিবাব জন্য তিনি পুনরায় কেরলে ফিরিয়া আসেন। দেশে অৰ্পিলার কিছুদিন পরেই তাছার মাতবে মৃত্যু হয়। মা তাব শেষ কাৰ্য্য সম্পন্ন করিখ তিনি দেশ ত্যাগ করিলেন। কথিত আছে যে, এ সময়ে দেশের লোকেল। তাছার প্রতি লম্ব্যবহাল করেন নাই শঙ্করাচtযা ভারতবর্ষে পুনরায় বেদন্তি মত প্রতিষ্ঠার জন্যই আত্মজীবন উৎসগ করিখা গিয়াছেন। তাছার নিজমত প্রতিষ্ঠার জন্য বৌদ্ধধৰ্ম্মালম্বী প্রধান প্রধান ব্যক্তিদের সহিত অনেক তর্কযুদ্ধ করিতে হইয়াছিল। যাহাতে নিরীশ্বপবাদ ( নাস্তিকতা ) দূর হইয়া মানুষ ঈশ্বববিশ্বাসী হয় কহাই ছিল তাহার একান্ত চেষ্টা । বেদ ও মতের উপর তাছবি ধৰ্ম্মমত প্রতিষ্টিত। সাধারণ লোকের জন্য তিনি শিবেক অবধিনাব প্রবর্তন করেন। শঙ্কবের শিষ্যের তাছাপে শিবের অবতার বলিয়া মনে কfরতের । শঙ্কৰাচাৰ্য্য ভারতবর্ষের বিভিন্ন স্থানে চারিটি মঠ প্রতিষ্ঠা করিয়া গিয়াছেন। দ্বারকীয় সারদা মঠ, নীলাচলে গোবৰ্দ্ধন মঠ, দাক্ষিণাতো শ্ৰীঙ্গেরী মঠ ও বদরিকাশ্রমে যোশী মঠ। এই সকল মঠের সন্নাসী অধিকারীরা এখন লক্ষ লক্ষ হিন্দুর নিকট মাচার্ষোর স্কায় সন্মান লাভ করেন। শঙ্করাচার্যের কিভাবে নৃত্যু হইষাছিল সে বিষয়ে ভাল করিয়া কিছুই জানা যায় না । কথিত আছে, কেবলমাত্র ৩২ বৎসর বয়সে হিমালয়ের অন্তর্গত কেদারনাথ তীর্থে তাহার মৃত্যু হয় । শঙ্করের লিখিত ব্রহ্মস্থত্রেব ভাষা, মোহ মুগদপ, গঙ্গার স্তব ইত্যাদি প্রসিদ্ধ। শঙ্করাচ্যমের বাণী ক্ষণকালও যদি সাধুসঙ্গ লাভ করা যায়, তাহ। হইলে মুক্তির পথ আপনা হইতেই মানুষের নিকট আসিয়া উপস্থিত হয়। ধন, জন, যৌবন ও ঐশ্বর্ঘ্যের গৰ্ব্ব করিও না,-কাল নিমেষ মধ্যেই এই সকল হরণ করিয়া লয় । EᏱ8Ꮔ আজ যে দেহ তোমার বলিষ্ঠ ও সুন্দর, কিছুদিন পরে তাহ রোগ ও জরায় জীর্ণ হইয়া যাইঘে— অতএব ঈশ্বরকে স্মরণ করিয়া ধৰ্ম্মপথে চলাই কৰ্ত্তব্য । জ্ঞানের অহঙ্কার, ধৰ্ম্মের অহঙ্কার সমস্ত, বিসর্জন দিয়া আপনাকে তৃণের স্থায় লঘু জ্ঞান করিয়া চলিলেই প্রকৃত ধৰ্ম্ম-পথের সন্ধান পাইবে ।