fostoss-of-go পারত। উপরন্তু তারা বেশীর ভাগই ছিল নিরক্ষার জেলে-মালা, কোনও ক্রমে নিজের কাজটা সেরে উপরে ভেসে উঠত। জলের মধ্যে যে সমস্ত আশ্চর্ম্য অাশচাৰ্য্য জিনিস তাদের নজরে পড়ত, তা তারা লক্ষ্য করে দেখতও না, সে গুলো বর্ণনা করার ক্ষমতাও তাদের ছিল না। এই ভাবে মধ্যযুগের শেষ পর্যান্ত কেটে গেল। সাগর সম্বন্ধে মামুষের ধারণা সেই প্রাচীন যুগের মতই অস্তুত রয়ে গেল। পঞ্চদশ শতকে যখন বড় বড় সমুদ্রগামী জাগজ তৈরী হতে লাগল, যখন কলস্বস, ভাস্কো দা গামা, কে বট, ড়েক প্রভূতির মত অসমসাহসিক নাবিকের মতাসমুদ্রে পাড়ি দিতে সুক করলেন, তখন জলের উপরকাব ঢেউ, স্রোত, জোয়াব-ভাটা, মৌসুমী ঝড় ইত্যাদি নানা ব্যাপারের দিকে মানুষের বেশী করে নজর যেতে লাগল। কাবণ এ সব বিষয়ে জ্ঞান না থাকলে খোলা দরিয়াতে জাহাজ চালান অসম্ভব । তারপর ক্রমশঃ ডুবুরীদের পোষাক, টুপী, মুগোসের উদ্ভব হল । জলেব ভিতর অক্সিজেনসাহায্যে তাদের শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার ব্যবস্থা হল। তখন তাৰ সমুদ্রগর্ভেব জীব-জন্তু, গাছপালা, পাহাড়-পৰ্ববত সব নজর করে দেখবার অবকাশ পেলে । ততদিনে তাপ-মান, চাপমান যন্ত্রাদিও তৈরী হয়েছে, অতি সূক্ষ্ম পদার্থ-কণা ও জীবাণু পরীক্ষা করার উপযোগী অণুবীক্ষণ যন্থও আবিষ্কাব হয়েছে। ক্রমে শিক্ষিত লোকও ডুবুরীর সাজ-সরঞ্জাম নিয়ে সাগর জলে ডুব দিতে আরম্ভ করলে, মুক্তা তোলার জন্য নয়, সমুদ্রতল পর্যবেক্ষণ করার জন্য। কত কি সুন্দর সুন্দর আশ্চাৰ্য্য আশ্চৰ্য্য জিনিস তারা তুলে আনতে লাগল ! উনিশ শতক পৰ্য্যস্ত সমুদ্র-তলের সঙ্গে মামুষের কত দূর পরিচয় হয়েছিল, তার কতকটা ধারণা হবে তোমরা যদি বিখ্যাত ২১৩২ ফরাসী লেখক জুল ভার্ণ-এর একখানি উপস্থাস পড়—“সাগর-গর্ভে বিশ হাজার লীগ’ । বইখানি তোমাদের সবায়ের পড়া উচিত । পড়লে সমুদ্র সম্বন্ধে মনে একটা কৌতুহল জাগবে, এ বিষয়ে আরও জানতে চাইবে । অবশ্য ভুললে চলবে না, যে উপন্যাস পড়ছ । কেন না ওতে সত্যের আভাস যেমন আছে, কাল্পনিক ব্যাপাবও তেমনি অনেক কিছুই আছে । কাপ্তান নেমে ললে এক ব্যক্তি সংসারের উপর, আত্মীয় স্বজনের উপর,\ বিরক্ত হয়ে এক ডুবুরী জাহাজ তৈরী . করে তাইতে সমুদ্রগর্ভে ঘুরে বেড়ান। । তিনি ডাঙ্গার সঙ্গে কোন সংস্রব রাখেন না। খাবাব জিনিস ও নিজেদের প্রযোজনীয় অপর জিনিস সমস্তই সংগ্রহ করেন সমুদ্র থেকে । কত রকম মাছ ও জলজস্থর বর্ণনা যে আছে ওই বইখানাতে! কত জলজ গাছ-পালার নাম যে শিখলে তোমরা । জাহাজখানার নামও তেমনি—নটলস্ ! এই নটিলস সমুদ্র-তলের এক অদ্ভূত দর্শন জানোয়ার। বড় বড় জ্বলজ্বলে চোখ, অক্টোপাসের মত মাথার চারিদিকে গোটা দশেক লম্বা লম্বা শুড়ি। সাধারণতঃ দেহটাকে সঙ্কুচিত করে লুকিয়ে রাখে তার খোসার ভেতর । যখন সঁাতার দেয়, খোসাটা দেহের নীচে নীচে চলে ঠিক যেন একখানি সুন্দর ছোট নৌকা ! এই নটীলস সম্বন্ধে সে কালের আরিষ্টটল থেকে একালের বায়বন, পোপ, হোমস অবধি কত সুন্দর সুন্দর কবিতা লিখে গেছেন। দুই একটা নমুনা না দিয়ে থাকতে পারছি না। যারা ইংরাজী জান, পড়লেই বুঝতে পারবে। The tender Nautilus who steers his prow The sea-born sailor of his shell canoe. –Byron
পাতা:শিশু-ভারতী - ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/১৯৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।