পাতা:শিশু - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

বিম্ববতী

রূপকথা

সযত্নে সাজিল রানী, বাঁধিল কবরী,
নবঘনস্নিগ্ধবর্ণ নব নীলাম্বরী
পরিল অনেক সাধে। তার পরে ধীরে
গুপ্ত আবরণ খুলি আনিল বাহিরে
মায়াময় কনকদর্পণ। মন্ত্র পড়ি
শুধালই তারে, 'কহো মোরে সত্য করি,
সর্বশ্রেষ্ঠ রূপসী কে ধরায় বিরাজে।'
ফুটিয়া উঠিল ধীরে মুকুরের মাঝে
মধুমাখা হাসি-আঁকা একখানি মুখ;
দেখিয়া বিদারি গেল মহিষীর বুক—
রাজকন্যা বিশ্ববতী, সতিনের মেয়ে,
ধরাতলে রূপসী সে সবাকার চেয়ে॥

তার পরদিন রানী প্রবালের হার
পরিল গলায়। খুলি দিল কেশভার
আজানুচুম্বিত। গোলাপী অঞ্চলখানি,
লজ্জার আভাস-সম, বক্ষে দিল টানি।
সুবর্ণমুকুর রাখি কোলের উপরে
শুধাইল মন্ত্র পড়ি, ‘কহো সত্য ক’রে
ধরা-মাঝে সব চেয়ে কে আজি রূপসী।'
দর্পণে উঠিল ফুটি সেই মুখশশী!
কাঁপিয়া কহিল রানী, অগ্নিসম জ্বালা,