পাতা:শুভদা - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

st নবম পরিচ্ছেদ সংসারে সে বঁাচিয়াছে। সে রাত্ৰে সদানন্দ অনেক ভাবিল ; যাইবার সময় ললন তাহাকে তুলিয়া যায় নাই সে কথা মনে পড়িল, মাধবচন্দ্ৰ মরিতেছে একথাও স্মরণ হইল, আর শুভদা-তাহার মনে হইল যে, ললনা মরিয়া তাহার যত দুঃখকষ্ট সমস্তই তাহার ঘাড়ে চাপাইয়া দিয়া গিয়াছে। মাধবচন্দ্রের মনেও সে রাত্রে খুব সুখ ছিল না। মধ্য হইতে তাহার একটা দুর্ভাবনা আসিয়া জুটিয়াছে। এতদিন সে নিশ্চিন্ত ছিল যে সময় হইলে ললনা আসিয়া তাহাকে লইয়া যাইবে, কিন্তু সদাদাদা একটু অন্যরূপ বলিয়াছে—তাহার শরীরে আর একটুও সামর্থ্য নাই, সে স্থলে কেমন করিয়া সে অতদূর যাইতে পরিবে ? ভাবিয়া ভাবিয়া অনেক রাত্রে সে নিশ্চয় করিল যে তাহার দিদি কখন মিথ্যা বলিবে না।-- যথাসময়ে নিশ্চয়ই আসিবে । মাধবচন্দ্র তখন অনেকটা শান্ত মনে নিদ্রা গেল । anasa 2-ifacsar আরো কতদিন কাটিয়া গেল । ছলনা বাপের বাটী ফিরিয়া আসিল, পাড়ার মেয়েরা আর একবার নূতন করিয়া কন্যা জামাতা দেখিয়া গেলেন, কত হাসি কত তামাসা গড়াইয়া গেল, হরমোহন নিজে এখানে আসিয়া সকলকে মধুর সম্বোধনে আপ্যায়িত করিয়া বেয়ান ঠাকুরাণীর নমস্কার গ্ৰহণ করিয়া ফিরিয়া গেলেন, হারাণচন্দ্ৰ কোমরে ফস চাদর বঁাধিয়া বামুনপাড়ার প্রত্যেক দোকানে একবার করিয়া বসিয়া তাহাদিগকে মোহিত করিলেন- এইরূপ অনেক ঘটনা ঘটিয়া গেল। আজ মাধবচন্দ্রের পীড়া বড় বৃদ্ধি পাইয়াছে। শয্যার উপর ছটফট, করিতেছে এবং পার্থে, শিয়রে, পদতলে পিসীমাতা, কৃষ্ণঠাকুরাণী, ছলনা। প্রভৃতি বসিয়া আছে। শুভদা এখানে নাই-সে রন্ধনশালায় বসিয়া