পাতা:শুভদা - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ybrSb দ্বাদশ পরিচ্ছেদ

করণে সেই গ্রামজোড়া জাহাজ আর লাটসাহেবের কান্নার কথা জাগাইয়া দিতে লাগিল ।

পরদিন প্ৰাতঃকাল হইবামাত্ৰই জয়ার মা নারায়ণপুর অভিমুখে রওনা হইয়া পড়িল। ক্ৰমে সে নারায়ণপুরে প্রবেশ করিল। সেই পথ, সেই ঘাট, সেই বৃক্ষের শ্রেণী, সেই সাব-সমস্ত পরিচিত। জয়ার মার মনে পড়িল যে এই পথ দিয়াই সে চলিত, আবার এই পথ দিয়াই বক্ষে আঘাত করিতে করিতে ফিরিয়া আসিত । আর সে নাই, তেমন ঝগড়া আর কখনো হইবে না, তেমন করিয়া আকুল হইয়া উঠিল, সহস্ৰগুণ চীৎকারে তাহা শমিত করিতে করিতে জয়ার মা চলিল। যাহার বাটীর সম্মুখ দিয়া যাইতে লাগিল, তাহাকে শত কৰ্ম্ম ফেলিয়াও অন্ততঃ একবার জানালার নিকট আসিতে হইল । ক্রমে সুরেন্দ্ৰবাবুর অট্টালিকা ঐ সম্মুখে ! জয়ার কত স্মৃতি তাহাতে মাখান আছে ; জয়ার, মা আকুলভাবে ক্ৰন্দনের তোড় আরো সহস্ৰগুণ বৃদ্ধি করিয়াছিল। সম্মুখের গেট দিয়া পূর্বে সে ঢুকিতে পাইত না ; কারণ বাবুর নিষেধ ছিল, কিন্তু এমন ব্যাড্রিনীর ন্যায় সে ছুটিতে ছুটিতে প্ৰবেশ করিয়া পড়িল যে দ্বারবানদিগের বাধা দিতে কিছুতেই সাহসী হইল না। সকলেই প্ৰায় দশহস্ত পিছাইয়া দাড়াইল । সুরেন্দ্রবাবু তখন আহারান্তে বিশ্রাম করিবার প্রয়াস করিতেছিলেন, চীৎকার শব্দে বুঝিলেন জয়ার মা ঝড়ের মত আসিয়া পড়িল। আসিয়াই সে জয়াবতীকে ফিরাইয়া পাইবার জন্য অন্ধভাবে এক আবেদন করিয়াই নিকটে উপবেশন করিল, তাহার পর আর এক আবেদন, আর এক আবেদন, কথা শেষ না হইতেই পুনঃ পুনঃ শত সহস্ৰ আবেদন, ভিক্ষা প্রার্থনা, কৈফিয়ৎ তলব ইত্যাদি নানাপ্রকারে সুরেন্দ্রনাথকে একেবারে