পাতা:শুভদা - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ਭੈਝ ਛੋਟਕ তখন দ্বিপ্রহরের সময় যে সব মেঘ বাতাসের দৌরাত্ম্যে ছিন্ন ভিন্ন হইয়া পলাইয়া গিয়াছিল, তাহারা সন্ধ্যার পরেই একটির পর একটি করিয়া মহাসমারোহে বাজনা বাদ্য বাজাইয়া আবার আকাশের গায়ে জোট বঁধিতে লাগিল । সকলেই স্থির করিল। আজ রাত্রে বৃষ্টি না হইয়া যায় না। গরম কমিবে-প্ৰাণ বাঁচিবে। এ বৃষ্টি সকলের মঙ্গলের জন্য, শুধু শুভদা মনে করিল। তাহারই কপাল দোষে আজ এই দুৰ্য্যোগের সূত্রপাত হইয়া আসিল । একে তা হলুদপুরের পথঘাট বনজঙ্গলের মধ্য দিয়া, তাহাতে আবার গাঢ় মেঘ করিয়াছে, তথাপি শুভদা বালা দুগাছি অঞ্চলে বাধিয়া, কাপড়খানি বেশ করিয়া গুছাইয়া পরিয়া, একটা বিছানার চাদরে সমস্ত অঙ্গ বেশ করিয়া আবৃত করিয়া বাটী হইতে নিষ্ক্রান্ত হইল। সে পূর্বে আর কখন বামুনপাড়া যায় নাই, শুধু শুনিয়াছিল মাত্ৰ যে উত্তর মুখ ধরিয়া চলিলে আধ ক্রোশ দূরে পাকারাস্তা পাওয়া যায় এবং আর একটু অগ্রসর হইলেই বামুনপাড়া। সেখানে পৌছিতে পারিলে জমিদার বাড়ি চিনিয়া লইতে বিলম্ব হইবে না। কারণ নন্দীদের প্রকাণ্ড অট্টালিকা গ্রামে প্ৰবেশ করিলেই দেখিতে পাওয়া যায়। সে শুনিয়াছিল। হলুদপুরের অন্ধকার পথ ছাড়াইয়া পাকা রাস্তা পাওয়াই তাহার বিপদের কথা হইয়া দাড়াইল । ক্ৰমে অন্ধকার গাঢ়তার হইয়া এক ফোটা দুই ফোটা করিয়া জল পড়িতে লাগিল; এক ফোটা দুই ফোটা পরিশেষে মুষলধারায় পরিণত হইল দেখিয়া শুভদা বৃক্ষতলে আশ্রয় গ্ৰহণ করিল। পথ চলা আর অসম্ভব ; অন্ধকারে একহন্ত দুরের পদার্থও আর দৃষ্টিগোচর হইতেছে না। প্ৰবল বৃষ্টি ও তৎসঙ্গে বিদ্যুৎ ও ঘঞ্জের শব্দে শুভদার ভিতর পর্য্যন্ত কঁাপিতে লাগিল। সে দেখিল চতুর্দিক হইতে