পাতা:শুভদা - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

V চতুর্থ পরিচ্ছেদ হারাণচন্দ্র চক্ষু রক্তবর্ণ করিলেন-চাকরিতে রাখবে ? আমি করলে তবে তা রাখবে ? হারামজাদা ভগবান নদীর এজন্মে। আমি আর মুখ দেখাব ? যদি বেঁচে থাকি ত প্ৰতিশোধ নেব।---আমাকে যেমন অপমান করেছে, তার শোধ তুলব। রাসমণি কিছুক্ষণ ভয়-বিস্মিত চক্ষে বীর ভ্রাতার পানে চাহিয়া থাকিয়া, মৃদু মৃদু বলিলেন, তাহ’লে কিন্তু খরচ-পত্রেরা সে ভাবনা ভেব না দিদি-বেটা ছেলে, আমার ভাবনা কি ? কালই আর এক জায়গায় চাকরি জুটিয়ে নেব । হারাণচন্দ্রের কথা যে রাসমণি সম্পূর্ণ বিশ্বাস করিলেন তাহা নহে, তথাপি কিঞ্চিৎআশ্বস্ত হইলেন। সম্পূর্ণ অবিশ্বাস করা অপেক্ষা কিঞ্চিৎবিশ্বাসকারিয়া এ দারুণ দুর্ভাবনার হাত হইতে নিস্কৃতি লাভ করিতে এ সময়ে সকলেরই ইচ্ছা হয় । রাসমণিও তাহাই করিলেন ; মনকে প্ৰবোধ দিলেন ; হয়ত সে যাহা বলিতেছে তাহাই করিবে ; এ বিপদের সময়ও অন্ততঃ চক্ষু ফুটিবে। কিছুক্ষণ মৌন থাকিয়া কহিলেন, যা ভাল হয় তাই করিাস-না হ’লে, অসুখ-বিসুখ, কাচা-বাচ্চা নিয়ে বিপদের সীমা পরিসীমা থাকবে না। একটা লম্বা-চওড়া উত্তর দিয়া হারাণচন্দ্ৰ আহার শেষ করিয়া গাত্ৰোখান করিলেন । এইবার মাধবের সহিত সাক্ষাৎ হইল । সে শুনিয়াছিল। পিতা আসিয়াছেন। তাই এতক্ষণ উন্মুখ হইয়া শয্যার উপর বসিয়াছিল । হারাণচন্দ্ৰ নিকটে আসিয়া তাহার গাত্ৰে হাত বুলাইয়া বলিলেন ; কেমন আছ মাধব ? আজ ভাল আছি বাবা ; তুমি এত দিন আস নি কেন ? হারাণচন্দ্র একটা মনোমত উত্তর খুজিতেছিলেন, কিন্তু মাধব সেজন্য অপেক্ষা করিল না। আবার বলিল, তুমি আমার জন্যে ওষুধ আনতে গিয়েছিলে, না ? ওষুধ এনেছ?