পাতা:শুভাশুভ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জগত যদি অন্য রকম হত, অন্য সব মানুষের সঙ্গে তাদের দু’জনেরও থাকত নিজের নিজের জীবনকে রূপ দেবার স্বাধীনতা-তাহলে ব্যাপারটা দাড়াত অনুপ্ত রকম । শুধু ব্যাপার নয়, তাদের চেতনাও হত। অন্যরকম। ভালবাসার মানে পর্যন্ত বুঝতে অন্যভাবে ! আজকাল প্রায়ই মাঝরাতে কুমারের ঘুম ভেঙ্গে যায়, অনেক চেষ্টাতেও আর ঘুম আসে না। মনে হয়, ভোতা মাথা-বোকা হাবা মানুষ । ব্যাপার বোঝা তার পক্ষে অসম্ভব। ভোরবেলা থেকে এত খেটে খুটে শ্রান্ত ক্লান্ত হয়ে ঘুমালো, মাঝরাত্রে শেষ হয়ে গেল ঘুমের পালা । রোগ নেই কিছু নেই।-কেন সে আঘোরে ঘুমোতে পারে না। সারারাত ? কেন তাকে নীরস শুকনো নীতি আর তত্ত্বকথার বই পড়ে রাত ভোর করতে হয়, রাতিজাগা শ্রাস্তিতে অবসন্ন দেহ নিয়ে শুরু করতে হয়। সারাদিনের খাটুনি ? মা বোনেদের একটা সাধারণ হিসাব নিকাশ আছে যার মোট কথাটা এই যে-রোজগেরে যোযান ছেলে, পয়সা কামিয়ে মা বোনকে পুষছে, বৌ ঘরে না এলে কি রাত জাগা বেগ ঘুচিবে ? বৌ ? নাঃ, পাশে একজনকে চেয়ে তো ঘুম ভাঙ্গে না তার, কোন মানুষের অভাব তো মোটেই সে বোধ করে না । কোন কোন দিন মনে হয় যে নন্দিতার সঙ্গ পেলে মন্দ হত না, আলাপ আলোচনা হাসি তামাসায় ঘুম আবার এলে আসত, না এলেও বিশেষ কিছু আসত যেত না । এমনি কোন কোন নিদ্রাহীন রাত্রির শেষে সে সোজা গিয়ে হাজির হত নন্দিতাদের বাড়ি । 8