পাতা:শুভাশুভ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মানুষ ওভাবে পায়ে ধরে মাপ চাওয়ার পর গোসা ঘরে দরজা বন্ধ করে ঘুমানো যায় ? সমস্ত ব্যাপারটা তলিয়ে বুঝবার চেষ্টা করতে গিয়ে সমরেশ কোন কুল কিনারা পায় না । শেষরাত্রে নেশা কেটে গেলে ভবানী তার পায়ে ধরে ক্ষমা চেয়েছে-এর মধ্যে স্বামীর ওপর অণিমার বিশেষ প্ৰতিপত্তির কোন প্ৰমাণ সমরেশ খুজে পায় না। নেশা করেও নন্দিতাকে বরং ওরকম বিশ্ৰী কথা বলার সাহস ভবানীর হত না-কোনদিন বলতেও পারে নি । দুপুরবেলা পাড়ায় একটু এবাড়ি ওবাড়ি মেয়েদের সঙ্গে গল্প করতে যাওয়া তো সামান্য কথা, দু’তিন দিন কোথাও গিয়ে কাটিযে আসার পরও নন্দিতাকে ওরকম কথা বলতে ভবানী ভরসা পায় নি । অণিমার কোমলতা আর ছেলেমানুষী আহলাদ্দীপনা পছন্দ করে বলেই কি ভবানী তাকে প্রশ্ৰয় দেয়-অন্যায় কথা বলার জন্য পায়ে ধরে ক্ষমা পৰ্যন্ত চায় ? স্বামীর ওপর তার প্রতিপত্তির এটাই কি আসল স্বরূপ ? নন্দিতার সত্যিকারের জোর ছিল-অণিমাকে ভবানী দয়া করে জোর খাটাতে দেয় ? অণিমার ওপর মায়া পড়েছিল, সমরেশের মনে গুরুতর আশঙ্কা জাগে । এই ছেলেমানুষী ভাবালুতা নিয়ে, ভবানীর সখের আদর ও প্রশ্রয়কে তাকে নাকে দড়ি দিয়ে ওঠানো বসানোর ক্ষমতা বলে ধরে নিয়ে, অণিমা কতদিন সামলে চলতে পারবে ? পাড়া বেড়ানো নিয়েই যদি ইতিমধ্যে বিশ্ৰী তিরস্কারের পালা শুরু হয়ে গিয়ে থাকে, সখের দরদী পাতলা হয়ে এলে ভবানী কি ব্যবহার শুরু করে দেবে কে জানে ? অণিমা নরম সুরে জিজ্ঞাসা করে, কি ভাবিছ ? বাকলাম বলে গোসা হল নাকি ? d GDR