পাতা:শুভাশুভ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বনমালী তখন কারবার খতম করতে রাজী হলে অনেক কম দুৱাবস্থা হত তার । কিন্তু আরেকটা যুদ্ধের ভরসা সম্বল করতে সমরেশ সাহস পায় না। বনমালীর যুদ্ধ বিকার তার কাছে হাস্যকর মনে হয়েছিল। ভবানীর যুদ্ধের ভবাসা তার কাছে বিপজ্জনক মনে হয়। যুদ্ধ না বাধলে ভবানী হয় তো নিজেকে বাঁচানোর জন্য আরও অনেকের সঙ্গে তাকেও গ্ৰাস করবে ! কিন্তু স্বাধীন ভাবে হলেও এভাবে ছাপাখানা ও বই-এর ব্যবসাও তো সে চালিয়ে যেতে পারবে না । সারা বছরের প্রাণপাত খাটুনি আর ছোটলোকামির বিনিময়ে সে নীট লাভ করেছে সাড়ে এগাব শ” টাকা । মাইনে মাগগী ভাত মিলিযে একশ’ টাকার সামান্য কেরানীগিরি করলেও তার মোট আয় হত বার শো টাকা । সাড়ে এগারশো টাকার জন্য ঘরে বাইরে ঘূণা বিতৃষ্ণ বিদ্বেষের কি বিষাক্ত পবিবেশই স্বষ্ঠি করেছে শুধু মাত্র একটি বছরের অধ্যবসায়ে! আপন পর প্রায় সকলেই তাকে অমানুষ বলে জেনে গিয়েছে, চিনে গিয়েছে । দু’একজন ছাড়া মুখের ওপব সেট। অবশ্য কেউ জানায় না। কিন্তু তার নিজের জ্ঞান বুদ্ধি তো একেবারে লোপ পায় নি-ওটুকু বুঝতে তার অসুবিধা হয় না । সে তো বুঝতে পারে তার সঙ্গে সকলের কথাবার্তা আচার ব্যবহার মেলামেশা কী ভাবে একেবারে পাণ্টে গেছে। সকলের সঙ্গেই তার সম্পর্ক অন্যরকম হযে গেছে । সব চেয়ে স্পষ্ট হয়ে ধরা পড়ে—তার জন্য অনেকের যে খাঁটি দরদ ছিল, সে দরূদ শুকিয়ে শেষ হয়ে যেতে বসেছে । RRR