পাতা:শুভাশুভ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হুমতি আরেকবার হাই তোলে। টগবগ আওয়াজ তুলে কড়ায়ে ফুটছে। পাতলা ডাল। উনানের তলা থেকে ঘুটের ছাই নিয়ে দাঁত মাজতে মাজতে: সে সমরেশের কাছেই উবু হয়ে বসে। রাত্রের এটো বাসনের ভুর থেকে একটা বাটি টেনে নিয়ে থুথু ফেলে বলে, একছিলুম তামাক দেব ? বিড়ি না টেনে বাবার মত তামাক খেলেই পারিস । আজি আচমকা সমরেশের একটা অদ্ভুত কথা মনে আসে-সুমতির কি একটু রূপের দেমাক আছে ? তার হাই তোলার মধ্যে পর্যন্ত একটা যেন বিশেষ ভঙ্গি আছে ! বোনটি তার সুন্দরী কিনা আগে কোনদিন সেটা খেয়ালও করে নি। ওর বিয়ের চেষ্টা সুরু করে তার প্রথম নজরে আসে সুমতি সত্যই খুব সুন্দরীওকে দেখে কেউ অপছন্দ করবে না । সুমতিকে খানিকক্ষণ লক্ষ্য করে সমরেশ টের পায়, রূপের দেমাক থাক বা না থাক, নিজের রূপ সম্পর্কে সুমতি বেশ সচেতন । সুমতির পর তিন বছর ফাক দিয়ে জন্মেছিল প্ৰণতি । লম্ব ছিপছিপে গড়ন, মুখটাও একটু লম্বাটে, সুমতির মতই গায়ের রঙ । মুখের গড়ন ওরকম লম্বাটে না হলে তাকেও বেশ সুন্দরীই বলা যেত । মনে হয় একটু হাল্কা প্ৰকৃতির ফাজিল ধরনের মেয়ে—সময় সময় সবার ছোট সুনীতির চেয়েও তার ছেলেমানুষী ভাবটা যেন বেশীরকম উথলে ওঠে । সুমতি বলে ছ্যাবলামি-কিন্তু প্রীতি কিম্বা সমরেশ কিছুই বলে না । প্ৰণতির স্বভাবের আরেকটা দিক আছে, আর কোন বোনের মধ্যে যা দেখা याझ नि । যেমন চালাক চতুর তেমনি সব বিষয়ে চটপটে । কোনদিকে কিছু করার সুযোগ সুবিধা নেই। তবু ছেলেবেলা থেকেই অনেক কিছু করার জন্য তার অদম্য উৎসাহ । (S