পাতা:শেষের কবিতা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 লাবণ্যর হঠাৎ উদ্ভিতত্ত্বের ঝোঁক এল, নুয়ে পড়ে দেখতে লাগল ঘাসের মধ্যে সাদায়-হলদেয়-মেলানো একটা বুনো ফুল। একান্ত মনোেযোগে তার পাপড়িগুলো গুনে দেখার জরুরি দরকার পড়ল।

 অমিত বললে, 'জান, বন্যা, আমাকে তুমি আজ পথের দিকে ঠেলে দিয়েছ।'

 ‘কেমন করে?'

 ‘আমি ঘর বানিয়েছিলুম। আজ সকালে তোমার কথায় মনে হল তুমি তার মধ্যে পা দিতে কুণ্ঠিত। আজ দু মাস ধরে মনে মনে ঘর সাজালুম। তোমাকে ডেকে বললুম, এসো বধূ, ঘরে এসো। তুমি আজ বধূসজ্জা খসিয়ে ফেললে; বললে এখানে জায়গা হবে না বন্ধু, চিরদিন ধরে আমাদের সপ্তপদী-গমন হবে।'

 বনফুলের বটানি আর চলল না। লাবণ্য হঠাৎ উঠে পড়ে ক্লিষ্ট স্বরে বললে, 'মিতা, আর নয়, সময় নেই।'

১৪২