পাতা:শেষের কবিতা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

উচ্ছ্বাসে বাধা পেয়ে কেটির পায়ের কাছে শুয়ে একটু নিদ্রার চেষ্টা করছিল। অমিতর আগমনে তাকে সম্বর্ধনা করবার জন্যে আবার অসংযত হয়ে উঠল। সিসি আবার তাকে শাসনের দ্বারা বুঝিয়ে দিলে যে এই সদভাব-প্রকাশের প্রণালীটা এখানে সমাদৃত হবে না।

 দুই সখীর প্রতি দৃক্‌পাত মাত্র না করে 'মাসি’ বলে দূর থেকে ডেকেই অমিত যোগমায়ার পায়ের কাছে পড়ে তাঁর পায়ের ধুলো নিলে। এ সময়ে এমন করে প্রণাম করা তার প্রথার মধ্যে ছিল না। জিজ্ঞাসা করলে, ‘মাসিমা, লাবণ্য কোথায়?'

 'কী জানি বাছা, ঘরের মধ্যে কোথায় আছে।'

 'এখনো তো তার পড়াবার সময় শেষ হয় নি।'

 ‘বোধ হয় এঁরা আসাতে ছুটি নিয়ে ঘরে গেছে।'

 'চলো, একবার দেখে আসি সে কী করছে।'

 যোগমায়াকে নিয়ে অমিত ঘরে গেল। সম্মুখে যে আর কোনো সজীব পদার্থ আছে সেটা সম্পূর্ণই অস্বীকার করলে।

 সিসি একটু চেঁচিয়ে বলে উঠল, ‘অপমান! চলল কেটি, ঘরে যাই।'

 কেটিও কম জ্বলে নি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত না দেখে সে যেতে চায় না।

 সিসি বললে, 'কোনো ফল হবে না।'

 কেটির বড় বড় চোখ বিস্ফারিত হয়ে উঠল; বললে,'হতেই হবে ফল।'

১১
১৬১