পাতা:শেষের কবিতা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 ‘তা দাও।'

 ‘তোমাকে ডাকব বন্য বলে।'

 'বন্য!'

 'না না, এ নামটাতে হয়তো বা তোমার বদনাম হল। এরকম নাম আমাকেই সাজে। তোমাকে ডাকব— বন্যা। কী বল?'

 'তাই ডেকো, কিন্তু তোমার মাসিমার কাছে নয়।'

 ‘কিছুতেই নয়। এসব নাম বীজমন্ত্রের মতো, কারো কাছে ফাঁস করতে নেই। এ রইল আমার মুখে আর তোমার কানে!'

 ‘আচ্ছা বেশ।'

 ‘আমারও ওই-রকমের একটা বেসরকারি নাম চাই তো। ভাবছি, ব্রহ্মপুত্র কেমন হয়! বন্যা হঠাৎ এল তারই কূল ভাসিয়ে দিয়ে।'

 ‘নামটা সর্বদা ডাকবার পক্ষে ওজনে ভারী।

 ‘ঠিক বলেছ। কুলি ডাকতে হবে ডাকবার জন্যে। তুমিই তা হলে নামটা দাও। সেটা হবে তোমারই সৃষ্টি।'

 'আচ্ছা, আমি দেব তোমার নাম ছেঁটে। তোমাকে বলব— মিতা।'

 ‘চমৎকার। পদাবলীতে ওরই একটি দোসর আছে— বঁধু। বন্যা, মনে ভাবছি, ওই নামে নাহয় আমাকে সবার সামনেই ডাকলে, তাতে দোষ কী?'

 'ভয় হয়, এক কানের ধন পাঁচ কানে পাছে সস্তা হয়ে যায়।'

৭৬