পাতা:শেষের পরিচয় - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ରକ শেষের পরিচয় কাজের মধ্যেও ব্যাপারটা ভিতরে ভিতরে তঁহাকে বিঁধিতেছিল--- ঝাড়িয়া ফেলিতে পারেন নাই । সারদা মুখ তুলিয়া কহিল, না মা, রাগ করে তা নয়। --রাগ করে বই কি ! ও সকাল থেকেই একটু রেগে ছিল, তাতে আবার টাকা দিতে পারিনি,-তুমি বুঝি দশ টাকা তাকে দিলে ? --না মা, আমার কাছে নিলেননা, মিনুর দিদিমার কাছ থেকে একশ টাকা এনে দিলুম। —এমনি ? শুধু হাতে সে দিলে যে বড়ো ? সারদা বলিল, না এমনি তো নয়। উনি হাতের সোনার ঘড়িটা আমাকে খুলে দিয়ে বললেন এর দাম তিনশ টাকা, তিনি য’ দেন নিয়ে এসোঁ ! ওঁর চা-বাগানের কিছু কাগজ আছে তাই বিক্ৰী করে এই মাসেই শোধ দেবেন বললেন । সবিতা জিজ্ঞাসা করিলেন, হঠাৎ টাকার দরকার ওর হোলো কিসে? সারদা কহিল, কে-একটি মেয়ে বড় পীড়িত, তারই চিকিৎসার জন্যে । --মেয়েটি কে যে তার জন্যে রাতারাতি ওকে ঘড়ি বন্ধক দিতে হয় ? --সে তো জানিনে মা । কিন্তু, বোধ হয় তার খুব শক্ত অসুখই হয়েছে। টাকার অভাবে পাছে মারা যায় এই তার ভয় । মেয়েটির বাপ নাকি ছেলেবেলায় ওঁকে মানুষ করেছিলেন । সবিতা আশ্চৰ্য্য হইয়া বলিলেন, ছেলেবেলায় ওকে মানুষ করেছিল বললে ? এ ওর বানানো গল্প। রাজুকে কে মানুষ করেছে আমি জানি । ঠার মেযের চিকিৎসায় পরকে ঘড়ি বাধা দিতে হয়না। সারদা তাহার মুখের পানে চাহিয়া বলিল, বানানো গল্প বলে তা মনে হয়না মা । বলতে গিয়ে চোখে জল এলো,--বনালেন, এদের ও বিত্ত-বিভব অনেক ছিল। কিন্তু হঠাৎ ব্যবসা নষ্ট হয়ে দেনার জন্যে বাড়ী-ঘর, পৰ্যন্ত বিক্ৰী