পাতা:শেষের পরিচয় - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

b።” ঠাকুর-ঘরের ভিতরে ব্ৰজবাবু এবং বাহিরে মুক্তদ্বারের অনতিদূরে বসিয়া সবিতা অপলক-চক্ষে চাহিয়া স্বামীর কাজগুলি নিরীক্ষণ করিতেছিলেন। একদিন এই ঠাকুরের সকল দায়িত্ব ছিল তঁহার নিজের, তিনি না করিলে স্বামীর পছন্দ হইতেন । তখন সময়াভাবে অন্যান্য বন্থ সাংসারিক কৰ্ত্তব্য তঁহাকে উপেক্ষা করিতে হইত। তাই পিসশাশুড়ী নানা ছলে তাহার নানা ত্রুটি ধরিয়া নিজের গোপন বিদ্বেষের উপশম, খুজিতেন, আশ্রিত ননদেরা বঁকা কথায় মনের ক্ষোভ মিটাহঁত, বলিত, তাহারা কি বামুনের ঘরের মেয়ে নয় ? দেব-দেবতার কাজ-কৰ্ম্ম কি জানেন ?" পূজা-অৰ্চনা, ঠাকুর-দেবতা কি নতুন-বোয়ের বাপের বাড়ীর একচেট যে সে-ই শুধু শিখে এসেছে ? এ সকল কথার জবাব সবিতা কোনদিন দিতেননা । কখনো বাধ্য হইয়। এ ঘরের কাজ যদি অপরকে করিতে দিতে হইত। সারাদিন তাহার মন-কেমন করিতে থাকিস্ত, চুপি-চুপি আসিয়া ঠাকুরের কাছে ক্ষমা চাহিয়া বলিতেন, গোবিন্দ, অধাতু হচ্চে বাবা জানি কিন্তু উপায় যে নেই। সেদিন নিরবচ্ছিন্ন শুচিতা ও নিচ্ছিদ্র অনুষ্ঠানে কি তীক্ষ্ম দৃষ্টিই না। তাহার ছিল। আর আজ ? সেই গোপাল মূৰ্ত্তি তেমনি প্ৰশান্ত-মুখে আজও চাহিয়া আছেন, অভিমানের কোন চিঙ্ক ও-দুটি চোখে নাই। এই পরিবারে এতবড় যে প্ৰলয় ঘটিল, ভাঙা-গড়ায় এই গৃহে যুগান্ত বহিয়া গেল, এতবড় পরিবর্তন ঠাকুর কি জানিতেও পারেন নাই ? একেবারে নিৰ্বিকার উদাসীন ? তঁহার অভাবের দাগ কি কোথাও