পাতা:শেষের পরিচয় - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Σ’ ά ο শেষের পরিচয় আগুন জেলে জীবনের পথ হাৎড়ে বেড়াতে হয়নি। সংসার যাত্রায় স্বামীর রূপ-যৌবনের প্রশ্নটা মেয়েদের তুচ্ছ কথা মা, দুদিনেই হিসেবের বাইরে পড়ে যায়। ] সারদা অশিক্ষিত হইলেও এমন কথাটাকে ঠিক সত্য কথা বলিয়া গ্ৰহণ করিতে পারিলনা, বুঝিল এ তার পরিতাপের গ্লানি, প্রতিক্রিয়ার অতল আলোড়িত হৃদয়ের ঐকান্তিক মাৰ্জনা ভিক্ষা । ইচ্ছা হইলনা প্ৰতিবাদ করিয়া তাহার বেদনা বাড়ায় কিন্তু চুপ, করিয়াও থাকিতে পারিলনা, বলিল, একটা কথা ভারি জানতে ইচ্ছে করে মা, কিন্তু সবিতা কহিলেন, কিন্তু কি মা ? প্রশ্ন করে লজ্জন দিতে আর আমাকে চাওনা,- এই ত? আর লজ্জা বাড়বেনা। সারদা,তুমি স্বচ্ছন্দে জিজ্ঞাসা করে । তথাপি সারদার কুণ্ঠ ঘূচনা। সে চুপ করিয়া আছে দেখিয়া তিনি নিজেই বলিলেন, হয়ত জানতে চাও এই যদি সত্যি। তবে আমারই বা এতবড় দুৰ্গতি ঘটলো কেন ? এর উত্তর অনেক দিন অনেক ব্লকমে ভেবে দেখেচি৷ কিন্তু আমার গত-জীবনের কৰ্ম্মফল ছাড়া এ প্রশ্নের আজও জবাব পাইনি মা । যদিচ সারদা নিজেও কৰ্ম্ম-ফল মানে তথাপি নতুন-মারি এ উত্তরে তাহার মন সায় দিতে পারিলনা, সে চুপ করিয়াই রহিল। সবিতা তাহার মুখের প্রতি চাহিয়া ইহা বুঝিলেন, বলিলেন, আর এক জন্মের অজানা কৰ্ম্ম-ফলের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে এ জন্মের ভাঙা বেড়ার ফাক খুঁজে বেড়াচ্চি এতবড় অবুঝ আমি নই মা, কিন্তু এ গোলক-ধাঁধার বাইরের পথই বা কে বার করেছে বলো ত ? যে-লোকটাকে কাল আমি বিদায় দিলুম আমার স্বামীর চেয়ে তাকে কখনো বড়ো মনে করিনি, কখনো শ্ৰদ্ধা করিনি, কোনদিন ভালোবাসিনি তবু, তারই ঘরে আমার একটা যুগ কেটে গেল কি কোরে ? : '