পাতা:শেষের পরিচয় - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষের পরিচয় রাখাল হাসিয়া ফেলিয়া বলিল, এ যে চায়ের পেয়ালায় তুফান তুললে সারদা । তুচ্ছ ব্যাপারটাকে কি ঘোরালো কোরেই তুলচে । জ্বর কি কারো হয়না ? দুদিনেই ত সেরে গেল । সারদা বলিল, সেরে যে গেলো ভগবানের সে-দয়া আমাদের ওপর,- আপনাকে না । আসলে আপনি ভারি খারাপ লোক । বিষ খেয়ে নািরতে গেলুম, দিলেননা,--ছাসপাতালে দিন-রাত লেগে রইলেন । ফিরে এসে যে না খেয়ে মরবো তাতেও বাদ সাধলেন । একদিকে ত এই, আবার অন্যদিকে অসুখের মধ্যে যে একটুখানি সেবা করবো তা-ও আপনার সইলোনা । চিরকাল কি এমনি শত্ৰুতাই করবেন, নিস্কৃতি দেবেননা ? কি করেছিলুম। আপনার ? এ- জন্মের ত দোষ দেখিনে এ কি গত-জন্মের দণ্ড না-কি ? রাখাল জবাব দিতে পারিলিনা, অবাক হইয়া ভাবিল এই মুখ্য-চোর। ঠাণ্ডা মেয়েটাকে হঠাৎ এমন প্ৰগল্‌ভ করিয়া দিল কিসে! - সারদা থামিলনা । দিনের বেলার কড়া আলোতে এত কথা এমন অজস্র নিঃসঙ্কোচে সে কিছুতে বলিতে পারিতনা, কিন্তু এছিল রাত্রিকালনিরালা গৃহের ছায়াচ্ছন্ন অভ্যন্তরে শুধু সে আর অন্য জন-আজি বুদ্ধি ছিল শিথিল তন্ত্ৰাতুর,তাই অন্তগুঢ় ভাবনা তাহার বাক্যের স্রোতঃপথে অবারিত বাহির হইয়া আসিল, হিতাহিতের তর্জনী শাসন ভ্ৰক্ষেপ করিলানা । বলিতে লাগিল, জানেন দেবতা, জানি আমি কেন আপনি আজো বিয়ে করেননি । আসলে মেম্বুদর-ওপর আপনার ভারি। ঘূণা। কিন্তু এ-ও জানবেন যাদের আপনি এতকাল দেখেছেন, ফরমাস খেটেছেন, পিছু পিছু ঘুরেছেন তারাই সমস্ত মেয়ে-জাতের নিরিখ নয় । জগতে অন্য মেয়েও আছে । । এবার রাখাল হাসিয়া ফেলিল, জিজ্ঞাসা করিল। আজ তোমার হলো কি বলে।াত ?