পাতা:শেষের পরিচয় - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S. শেষের পরিচয় নিলেন। দেশে জমি-জমা চাষ-বাসও ছিল, দু-একখানি ছোট-খাটাে তালুকও ছিল, আবার কলকাতায় কি-যেন একটা কারবারও চলছিল। কিন্তু অধিকাংশ সময়ই তিনি থাকতেন বাড়ীতে, তখন দিনের অৰ্দ্ধেকটা কাটুতো তার পূজোর ঘরে,-দেব-সেবায়, পূজো-আফ্লিকে, জপ তপে। । আমি ইস্কুলে ভৰ্ত্তি হোলাম। বই, খাতা-পেন্সিল-কাগজ-কলম এলো, জাম-কাপড়া-জুতো-মোজা অনেক জুটলো, ঘরে মাষ্টার নিযুক্ত হলো, বেন। আমি এ-বাড়ীরই ছেলে,--নিরাশ্রয় বলে মা যে সঙ্গে করে এনেছিলেন এ কথা সবাই গেল ভুলে। তারক, এ জীবনে সে-সুখের দিন। আর ফিরবেন। আজও কতদিন আমি চুপ করে শুয়ে সেই সব কথাই ভাবি। এই বলিয়া সে চুপ করিল এবং বহুক্ষণ পৰ্য্যন্ত কেমন যেন একপ্রকার বিমন ৷ হইয়া রহিল । তারক কহিল, রাখাল, কি জানি কেন আমার বুকের ভেতরটা যেন টিপ চিপ করচে। তার পরে ? রাখাল বলিল, তারপরে এমন অনেকদিন কেটে গেল । ইস্কুলে ম্যাটিক পাশ করে কলেজে আই-এ ক্লাসে ভৰ্ত্তি হয়েছি, এমনি সময়ে হঠাৎ একদিন সমস্ত উণ্টে-পাণ্টে বিশ্ব-ব্ৰহ্মাণ্ড যেন লণ্ড-ভণ্ড হয়ে গেল । ভাঙতে চুরুতে কোথাও কিছু আর বাকি রইলনা। এই বলিয়া সে নীরব হইল । কিন্তু চুপ করিয়াও থাকিতে পারিলনী, কহিল, এতদিন কাউকে কোন ৷ কথা বলিনি। আর, বলবই বা কাকে ? আজও বলা উচিত কিনা

  • জানিনে, কিন্তু বুকের ভেতরটায় যেন ঝড় বয়ে যাচ্চে
  • চাহিয়া দেখিল তারকের মুখে অপরিসীম কৌতুহল, কিন্তু সো প্রশ্ন করিলঢ়ল। রাখাল নিজের সঙ্গে ক্ষণকাল লড়াই করিয়া অকস্মাৎ উচ্ছসিত কণ্ঠে বলিয়া উঠিল, তারক, নিজের মাকে দেখিনি, মা বলতে