পাতা:শেষের পরিচয় - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষের পরিচয় SM আমার নতুন মাকেই মনে পড়ে। এই আমার সেই নতুন-মা। এতক্ষণে সত্যই তাহার কণ্ঠ রুদ্ধ হইল। প্ৰথমে দুই চোখ জলে ভরিয়া আসিল, তারপরে বড় বড় কয়েক ফোটা অশ্রু গড়াইয়া পড়িল । মিনিট দুই-তিন পরে চোখ মুছিয়া নিজেই শান্ত হইল, কহিল, উনি তোমাকে দিন দুই থাকৃতে বলে গেলেন, হয়ত তোমাকে তঁর কাজ আছে। বারো-তেরো বছর পূর্বের কথা,-সেদিন ব্যাপারটা কি ঘটেছিল তোমাকে বলি । তারপরে থাকা না-থাকা তোমার বিবেচনা । তারক চুপ করিয়া ছিল, চুপ করিয়াই রহিল। রাখাল বলিতে লাগিল, তখন কে-একজন ওঁদের কলকাতার আত্মীয় প্রায়ই বাড়ীতে আসতেন। কখনো দু-একদিন, কখনো বা তার সপ্তাহ কোিট যেতো। সঙ্গে আসতো তেল-মাখাবার খানসামা, তামাক সাজবাৰু ভৃত্য, ট্রেন খবরদারি করবার দরওয়ান,-আর, নানা রকমের কত-{ে ফল-মূল-মিষ্টান্ন তার ঠিকানা নেই। পাল-পাৰ্বণ উপলক্ষে উপহারের পরিমাণ থাকতেন। তার সঙ্গে ছিল এদের ঠাট্টার সুবাদ। শুধু কো সম্পর্কের হিসেবেই নয়, বোধকরি বা ধনের হিসেব থেকেও এ বাড়ীতে । আদর-আপ্যায়ন ছিল প্রভৃত। কিন্তু বাড়ীর মেয়েরা যেন ক্রমশঃ কি গ্ৰহ প্রকার সন্দেহ করতে লাগলো। কথাটা ব্ৰজবাবুর কানে গেল, কিন্তু তিনি বিশ্বাস করা তো দূরের কথা, উণ্টে করলেন রাগ। দূর-সম্পর্কের এবং পিসতুতো বোনকে যেতে হোলো তার শ্বশুরবাড়ী । শুনেচি, এমনিই নাবি হয়ে থাকে,-এই হোলো দুনিয়ার সাধারণ নিয়ম । তাছাড়া, এইমাত্র তে ওঁর নিজের মুখেই শুনতে পেলে কৰ্ত্তার মতো সরল-চিত্ত ভালোমানুষ লোক সংসারে বিরল। সত্যিই তাই। কারও কোন কলঙ্ক মনেঃ মধ্যে স্থান দেওয়াই তাঁর কঠিন। আর, সন্দেহ কাকে, না, নতুন মাকে । ছি ।