পাতা:শেষের পরিচয় - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/২১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S ዓ¢ শেষের পরিচয় সারদা, রাজুকে আজ আমার চাই-ই, নইলে বাঁচবোনা। এসে তুমি আমার সঙ্গে। \্যা কিছু মায়ের ছিল পুটুলিতে বেঁধে নিয়ে আমরা লুকিয়ে গেলুম আপনার বাসায়, তারপরে গেলুম। ব্ৰজবাবুর বাড়ী, কিন্তু সব খালি সব শূন্য। নোটিশ ঝুলছে বাড়ী ভাড়া দেবার। জানা গেলনা কিছুই, বুঝা গেল শুধু কোথায় কোন অজানা গৃহে মেয়ে তার পীড়িত, অর্থ নেই ওষুধ দেবার, লোক নেই সেবা করার। হয়ত বেঁচে আছে, হয়ত বা নেই। অথচ উপায় নেই। সেখানে যাবার-পথের চিহ্ন গেছে নিঃশেষে মুছে । মাকে নিয়ে ফিরে এলুম। তখন বাইরের ঘরে চলচে। খাওয়া-দাওয়া নাচ-গান আনন্দ-কলরব। করবার কিছু নেই, কেবল বিছানায় শুয়ে তু-চোখ বেয়ে তঁর অবিরল জল পড়তে লাগলো । শিয়রে বসে নিঃশব্দে শুধু মাথায় হাত বুলোতে লাগলুম-এ-ছাড়া সাত্ত্বিনা দেবার তঁকে ছিলই বা আমার কি ! সেদিন বিমলবাবু ছিলেন সামান্য-পরিচিত আমন্ত্ৰিত অতিথি, তারই সম্মাননার উদ্দেশ্যে ছিল আনন্দ-অনুষ্ঠান। রমণীবাবু এলেন ঘরের মধ্যে তেড়ে,-বললেন চলো সভায় । মা বললেন, না, আমি অসুস্থ । তিনি বললেন, বিমলবাবু কোটী-পতি ধনী, তিনি আমার মনিব, নিজে আসবেন এই ঘরে দেখা করতে । মা বললেন, না সে হবেন । এতে অতিথির কত যে অসম্মান সে কথা মা না জানতেন তা’ নয়, কিন্তু অনুশোচনায়, ব্যথায়, অন্তরের গোপন ধিক্কারে তখন মুখ-দেখানো ছিল বোধকরি অসম্ভব। কিন্তু দেখাতে হলো। বিমলবাবু নিজে এসে ঢুকলেন ঘরে। প্রশান্ত সৌম্য মূৰ্ত্তি, কথাগুলি মৃদু, বললেন, অনধিকার প্রবেশের অন্যায় হলো বুঝি, কিন্তু যাবার আগে না এসেও পারলামনা। কেমন আছেন বলুন ? মা বললেন ভালো আছি। তিনি বললেন, ওটা রাগের কথা,