পাতা:শেষের পরিচয় - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/২৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२२१ শেষের পরিচয় সমস্ত যোগাড় করে রেখেচি, পোয়াটাক মাংস কিনেও এনেচি-সব গুছিয়ে দিয়ে তবে ঘরে যাবো । সকালে সত্যই খাওয়া হয় নাই, মাছি পড়িয়া বিঘ্ন ঘটিয়াছিল, কিন্তু রাখালের মনে ছিলনা। ইতিপূর্বেও এমন কতদিন হইয়াছে, তখন সকালের স্বল্পাহার রাত্রের ভুরি-ভোজনের আয়োজনে এই ঝি-ই পূর্ণ করিয়া দিয়াছে। নূতন নয়, অথচ, আজ তাহার কথা শুনিয়া রাখালের চোখ অশ্রু-ভারাক্রান্ত হইয়া উঠিল। বলিল, তুমি বুড়ো হয়েছে। নানী, কিন্তু মরে গেলে আমার কি দুৰ্দশা হবে বলে।াত ? জগতে আর কেউ নেই যে তোমার দাদাবাবুকে দেখবে। W এই স্নেহের আবেদনে ঝি’র চোখেও জল আসিল । বলিল, সত্যি কথাই তাঁ। বুড়ো হয়েছি মরবোনা ? কতদিন বলেছি তোমাকে কিন্তু কান দাওনা-হেসে উড়িয়ে দাও । এবার আর শুনবোনা, বিয়ে তোমাকে করতেই হবে । দুদিন বেঁচে থেকে চোখে দেখে যাবো, নইলে মরেও সুখ পাবোনা দাদা । রাখাল হাসিয়া বলিল, তাহলে সে-সুখের আশা নেই নানী। আমার ঘর-বাড়ী নেই, বাপ-মা আপনার লোক নেই, মোটা মাইনের চাকরী নেই, আমাকে মেয়ে দেবে কে ? ইস্ ! মেয়ের ভাবনা ? একবার মুখ ফুটে বললে যে কত গণ্ডা সম্বন্ধ এসে হাজির হবে । তুমি একটা করে দাওনা নানী। পারিনে বুঝি ? আমার হাতে লোক আছে তাকে কালই লাগিয়ে দিতে পারি। রাখাল হাসিতে লাগিল । বলিল, তা” যেন দিলে, কিন্তু বউ এসে খাবে কি বলে।াত ? খাবি খাবে না কি ?