পাতা:শেষের পরিচয় - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/২৪৩

শেষের পরিচয় سر9چ রেলওয়ে কোম্পানীর দায়িত্বে অৰ্পণ করিয়া রসিদিখানি সযত্নে পকেটে পুরিয়া তারক নিশ্চিন্তচিত্তে সেকেণ্ড ক্লাশ লেভী’স ওয়েটিংরমের সামনে আসিয়া ডাকিল-নতুন-মা- সবিতা ঘরের ভিতর হইতে দরজার সামনে আসিয়া দাড়াইলেন । তারক রুমাল দিয়া কপালের ঘাম মুছিতে মুছিতে বলিল, মালপত্র ওজন করে ব্রেকে দিয়ে রসিদ নিয়ে এলাম। এধারের ঝামেলা চুকাল। এখন ট্ৰেণটা প্ল্যাটফৰ্ম্মে ঢুকলেই হয়। আপনাকে বিছানা পেতে বসিয়ে দিতে পারলে তবে নিশ্চিন্ত হওয়া যাবে। সবিতা মৃদু হাসিয়া বলিলেন, নতুন-মার পাছে হরিণপুরে যাওয়া না হয় এ জন্যে তোমার ভয় আর ভাবনার অন্ত নেই, না তারক ? ? স্মিতমুখে তারক জবাব দিল, নিশ্চয়ই। যে পৰ্য্যন্ত না ছেলের কুঁড়েঘরে মায়ের পায়ের ধূলো পড়চে, ততক্ষণ নিজের ভাগ্যকে বিশ্বাস করিনে মা ! ছাড়িবার নির্দিষ্ট সময়ের আধঘণ্টা পূর্বে ট্ৰেণ প্ল্যাটফৰ্ম্মের ভিতরে আসিয়া দাড়াইল । ব্যতিব্যস্ত ভাবে তারক ওয়েটিংরামের দ্বারে আসিয়া উচ্চকণ্ঠে ডাকিল, --নতুন-মা, বেরিয়ে আসুন। ট্ৰেণ এসে গেছে। মহাদেব দরওয়ান ওয়েটংক্রমের বাহিরে কতকগুলি বাক্স বিছানার বাণ্ডিলের উপর বসিয়া খৈনি টিপিতেছিল। তাড়াতাড়ি থৈনি মুখে ফেলিয়া পাগড়ী ঠিক করিতে করিতে শশব্যান্তে প্ৰস্তুত হইয়া দাড়াইল । আপাদমস্তক সিন্ধের চাদর মণ্ডিতা সবিতা শিবুর-মা ঝি সহ ট্ৰেণ অভিমুখে তারকের অনুসরণ করিতে করিতে বলিলেন,-আমাকে তুমি ইণ্টার ক্লাসে মেয়েদের কামরায় তুলে দিও তারক। শিবুর-মাও আমার সঙ্গে থাকবে ।