পাতা:শেষের পরিচয় - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/২৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२89 শেষের পরিচয় তারক তার উপরে বিষম অসন্তুষ্ট হয়েচে । ওর ধারণা আমি পল্লীগ্রামে নানা অসুবিধার মধ্যে যাচ্চি, সারদা সঙ্গে থাকলে হয়তো আমার অনেক সুবিধা হোতে । বিমলবাবু বলিলেন, সেটা শুধু তারকই যে ভাবছে তা’তো নয়। আমিও যে ঠিক ওই ভাবনাই ভাবচি নতুন-বীে ! সবিতা করুণ হাসিয়া বলিলেন, কিন্তু আমি আজ ঠিক এর উল্টো डांदनई डiद5ि । বিমলবাবু সবিতার মুখে এত করুণ হাসি পূর্বে দেখেন নাই। র্তাহার বুকের ভিতরটা বেদনায় যেন মোচড় দিয়া উঠিল। সবিতার মুখের পানে স্থিরদৃষ্টিতে তাকাইয়া বলিলেন, আমি কি শুনতে পাইনে নতুন-বৌ ? ক্লান্তকণ্ঠে সবিতা বলিলেন, সমস্ত কথাই তোমায় একদিন বলবো ভেবেচি। আর কেউই তো আমার এ' অন্তৰ্দাহা বুঝতে পারবেনা, বিশ্বাস করতেও হয়ত চাইবেন । আমার অনেক জানিবার আছে। এই তেরো বৎসর ধরে দিনের পর দিন রাতের পর রাত ক্ৰমাগত যে-প্রশ্ন আমার বুকের ভিতর আছড়ে পিছড়ে মরছে, আজিও তার জবাব পাইনি। ভগবানের চরণে বারবার জানিয়েছি, ঠাকুর, তোমার অজানা তো কিছুই নেই। এতবড় নিৰ্ম্মম জিজ্ঞাসা আমার জীবনে তুমিই পাঠিয়েছ। তার জন্যে তোমাকে অভিযোগ করবনা, শুধু এর সত্য উত্তরটাও তুমি এই জীবনে আমাকে দিয়ে দিও। এছাড়া প্রার্থনার আর কিছুই তো রাখেনি। যত বৃহৎ দুঃখই দাওনা কেন, আমি তাকে তোমার হাতের দান বলে মেনে নিয়ে সোজা হয়েই চলতে পারতাম। কিন্তু, আমার জীবনে তো তুমি দুঃখ পাঠাওনি, পাঠিয়েচো শুধু তীব্র পরিহাস। মানুষের পরিহাস সওয়া কঠিন নয়, কিন্তু তোমার এ’ নিষ্ঠুর পরিহাস যে সহ হয়না !