পাতা:শেষের পরিচয় - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/২৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२११ শেষের পরিচয় ছিল আপনার ”পরে আমার অশ্রদ্ধা জাগিয়ে দেওয়া । তা’ নাহলে এ’সব কথা বলার তার কোনও প্রয়োজনই ছিলনা । সবিতা এইবার কথা কহিলেন । শান্তকণ্ঠে বলিলেন-রাজু, মিথ্যাকথা বলেন তারক । সে যা” কিছু তোমাকে বলেচে, সমস্তই সত্যি । তারকের মুখ বিবৰ্ণ হইয়া গেল । আমতা-আমতা করিয়া শুষ্ককণ্ঠে কহিল - আপনি জানেননা, মা, সে যে কি-ভগ্নানাফ কথা--- সবিতা কহিলেন-জানি। তুমি যা’ই কেন শুনে থাকনা তারক, রাজুর মুখের কোনও কথাই মিথ্যা নয়। তারকের কণ্ঠনালী কে যেন শক্ত মুঠায় চাপিয়া স্বররোধ করিয়া ফেলিল । চেষ্টা সত্ত্বেও আর একটি শব্দও কণ্ঠ হইতে নিৰ্গত छरुँनन् । সবিতা ধীরে ধীরে বলিতে লাগিলেন-তুমি রাজুর প্রতি শুধু ভুলই করেনি। তারক, অবিচার করেচ । সে তোমাকে ভুল বোঝাতে চায়নি, বরং তুমিই পাছে কিছু ভুল বোঝে, সেই ভয়ে গোড়াতেই সমস্ত ঘটনা খোলাখুলিভাবে তোমাকে সে জানিরেচে। যদি মনে করে থাকে। তার কথা মিথ্যে, তা’হলে খুবই ভুল করেচো । তারক শুষ্ক স্বরে কহিল-কিন্তু মা, আনি তো কিছুই জানতে চাইনি, সে উপযাচক হয়ে কেন সবিতা মলিন হাসিয়া কহিলেন-তুমি উচ্চশিক্ষিত, বুদ্ধিমান। সমস্তদিকে মন মেলে চিন্তা করে ভাল-মন্দ বিচারের শক্তি তোমার থাকাই সম্ভব। সংসারে দৃশ্যতঃ অনেক জিনিসই হয়তো আমরা একরকম দেখতে পাই, কিন্তু সাদৃশ্য থাকলেও তারা সমস্তই বস্তুতঃ এক নয়। তাছাড়া —এটা ত জানো-বাহির দিয়ে ভিতরের বিচার কোনও সময়েই করা চলেনা। এ সকল বিষয় সাধারণ লোকে বোঝেনা এবং বুঝতে চায়ওনা।